Breaking

Monday, 29 April 2019

সেন বংশের সূচনা/উৎস ও উপকরণ/আদি বাস স্থান /উৎপত্তি/রাজনৈতিক উত্তরণ

#সেন বংশের পটভূমি:::::::::::::
একাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে বাংলাদেশে সেন বংশের উৎপত্তি ঘটে। সেন বংশের উদ্ভব বাংশের ইতিহাসে এক যুগান্তকারি ঘটনা।বাংলার পাল বংশের দুর্বলতার সুযোগে সেন বংশের সূচনা হয়। সামন্তরাজা  সামন্তসেন পাল বংশের শেষ রাজা মদন পালকে পরাজিত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বাংলায় সেন বংশের সূচনা করেন। সেন রাজারা হলো বাংলায় দ্বিতীয় দীর্ঘতম রাজবংশ। সেনরা বাংলার আদি অধিবাসী ছিল না। তাদের আদি অধিবাস ছিল দাক্ষিণাত্যের কর্ণাট।সেনরা বাংলাই আগমণ করে যে রাজ্য গড়ে তুলেছিল তা ছিল পশ্চিম ও উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তার ও অখন্ড। ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির বাংলায় আগমন পর্যন্ত সেনবংশশাসিত রাজ্যের অখন্ডতা অব্যাহত ছিল।
# সেন আমলের উৎস ও উপকরণ:::::::::::::
সেন বংশের সম্পর্কের জানার জন্য সেন আমলের উৎকীর্ণ লিপিমালার উপর নির্ভর করতে হয় । আর সেন  আমলের যে সকল উৎস পাওয়া যায় সেগুলো হলো----
(১)বিজয়সেনের= দেওপাড়া প্রশস্তি

(২)বিজয়সেনের=ব্যারাকপুর তাম্রশাসন

(৩)বল্লালসেনের= নৈহাটি তাম্রশাসন

(৪)লক্ষ্মণসেনের= তর্পন দিঘি তাম্রশাসন

(৫)লক্ষ্মণসেনের= গোবিন্দপুর তাম্রশাসন

(৬)লক্ষ্মণসেনের=আনুলিয়া তাম্রশাসন

(৭)কেশবসেনের= ইদিলপুর তাম্রশাসন

(৮)কেশব সেনের=মদনপুর তাম্রশাসন

(৯)বিশ্বরুপসেনের=কলকাতা সাহিত্য পরিষদ তাম্রশাসন

#সেনরাজাদের আদি নিবাস::::::::::::::::::::::::
সেনরাজাদের আদি নিবাস সমন্ধে ঐতিহাসিকদের অনেক ধরনের মত পার্থক্য রয়েছে।সেনরা বাংলায়  যে বহিরাগত এই সম্পর্কে  অনেক ঐতিহাসিক এক মত।আবার অনেক ঐতিহাসিকের মতে সেনদের আদি নিবাস ছিল কর্ণাট দেশে। কর্ণাট দেশ হচ্ছে --মহারাষ্ট্র ও হায়দরাবাদ অঞ্চলের,দক্ষিণ এবং মহিশূর রাজ্যের উত্তর ও পশ্চিমাংশ।উত্তর বাংলায় বরেন্দ্র সামন্ত বিদ্রোহ দেখা দিলে পাল সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে প্রেক্ষিতে বিজয় সেন নামক সেনবংশের একজন শক্তিশালী উত্তরাধিকারী সেখানে সেনশাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
#সেন বংশের উৎপত্তি::::::::::::::::::::::
সেনদের লিপিমালা থেকে জানা যায় সেন রাজারা ছিলেন --চন্দ্রবংশীয় উত্তরাধিকার এবং ব্রহ্ম-ক্ষত্রীয়। সেনদের পূর্বপুরুষ ছিলেন ব্রাহ্মণ।পরবর্তীতে ব্রাক্ষণ বৃত্তি ত্যাগ করে ক্ষত্রীয় বৃত্তি গ্রহণ করেন বলে তাদের ব্রক্ষণ।পরবর্তীতে ব্রাক্ষণ বৃত্তি ত্যাগ করে ক্ষত্রীয় বৃত্তি গ্রহণ করেন বলে তাদের ব্রহ্ম-ক্ষত্রীয় হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। বাংলায় আগমণ পর থেকে তারা ক্ষত্রিয় বৃত্তি হিসেবে পরিচিত। আবার কোন কোন ঐতিহাসিকরা তাদের কায়স্থ ও বলেছেন। তবে ব্রহ্ম-ক্ষত্রীয় হিসেবেই তাদের  পরিচিতি বেশী। ব্রহ্মণ অর্থ-ধর্মশাস্ত্র চর্চা। সেনরা উভয় শাস্ত্র গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ব্রহ্মণ পেশা চেয়ে হ্মত্রীয়দের পেশাকেই তার ধরে রেখেছিল।
#সেনবংশের রাজনৈতিক উত্তরণ:::::::::::::::::::::
সেনরাজাদের বাংলায় আগমণ কাল, আগমনের ধরণ, আগমনের হেতু ও উপলক্ষ এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না।
এই প্রসঙ্গে বিজয় সেনের দেওপাড়া প্রশস্তি উল্লেখ করা  হয়েছে-কর্ণাটদেশে বহু যুদ্ধ বিগ্রহের পর সামন্তসেন গঙ্গতীরে জীবনযাপন করতে শুরু করেন।
আর বল্লাল সেনের নৈহাটি তাম্রশাসন উল্লেখ করা হয়েছে সামন্তসেনের পূর্বপুরুষ চন্দ্রবংশীয় বলে করা হয়েছে।
সেনবংশের প্রথম রাজার মর্যাদা দেয়া হয় সমন্তসেনের পুত্র- হেমন্তসেনকে। হেমন্তসেন মহারাজধিরাজ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন।হেমন্ত সেনের পর বিজয় সেনের আমলে সেন আমলে সেন বংশ আরো বিকশিত হয়।বিজয় সেনের ব্যারাকপুর তাম্রশাসন থেকে জানা যায় বিজয়সেন রাজরক্ষা সুদক্ষ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। ধারণা, করা  হয়  যে বিজয় সেন পাল সাম্রাজ্যের রামপালের অধীনে একজন সামন্ত রাজা ছিলেন।
 

No comments:

Post a Comment