Breaking

Saturday, 2 March 2019

সম্রাট শাহজাহান।



(সম্রাট শাহজাহান ১৬২৮-১৬৫৮ A.D)
 পরিচয়::::::::::::::::::::::::::::::::
১৫৯২ খ্রি.৬ জানুয়ারি শাহজাহান জন্ম গ্রহন করেন । তার বাল্য নাম ছিল খুররম (আনন্দময়) । তিনি ছিলেন জাহাঙ্গীর এর তৃতীয় পুত্র । তার মাতা একজন রাজপুত মহিলা ছিলেন । তার মাতার নাম জগৎ গোসাই । সম্রাট জাহাঙ্গীর তাকে শাহজাহান  উপাধি দেন । মুঘল বংশের নিয়ম অনুযায়ী চার মাস চার দিন বয়সে শাহাজাদা লেখাপড়া শুরু করেন । শাহজাহান অতিমাত্রায় মেধাবী ছিলেন । তিনি অল্পদিনের  মধ্যে বহু প্রয়োজনী জ্ঞান অর্জন করেন । ফার্সি ও হিন্দি  উভয় ভাষা  তিনি শিক্ষা  করেন । সাহিত্যর প্রতিও তার বিশেষ অনুরাগ ছিল ।
বিবাহিত জীবন ::::::::::::::::::::::::
মুঘল শাহজাদাগণের  একাধিক পত্নী গ্রহনের অভ্যাস ছিল ।শাহজাহানের ১৬ বছর বয়েসের পূর্বে কান্দাহারী বেগমের সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল ।তার বয়স যখন ১৬ বছর তখন নূরজাহানের ভাই  আসফ খানের কন্যা মমতাজ বেগমের সঙ্গে তার বাগদান হয় ‍। 
১৬১২ ‍A.D  ২০ বছর বয়েস পূর্ন হলে মমতাজের সঙ্গে তার বিবাহ হয় । মমতাজের আসল নাম ছিল আরজুমন্দবানু বেগম । তার উপাধি ছিল নবাব আলিয়া বেগম  এবং মমতাজ মহল । পরবর্তী উপাধিতে তিনি বিশেষ ভাবে পরিচিত । মমতাজ বেগম শাহজাহানকে ১৪ টি সন্তান উপহার দিয়েছিলেন । 
*জ্যেষ্ঠ পুত্র -দারাশিকোহ
*দ্বিতীয় পুত্র - সুজা
*তৃতীয় পুত্র-ঔরঙ্গজেব
* ছোট পুত্র- মুরাদ 
দুই জন কন্যাছিল:::::::::::::
*জাহানারা 
*রওশনআরা 
১৪ জন সন্তানদের মধ্যে এই কয়েক জন জীবিত ছিল । ১৬৩০ খ্রি. শাহজাহান যখন  দাক্ষিণাত্যে ছিলেন তখন বুরহানপুরে সন্তান প্রসবকালে মমতাজ মহল মৃত্যুমুখে পতিত হন । শাহজাহানের দুঃখ - কষ্টের দিনে এই মহীয়সী মহিলা তাকে পরামর্শ ও সান্তনা দিতেন। শাহজানের আরো দুই জন স্ত্রী ছিল তাদের উপাধি ছিল  সরহিন্দী বেগম ও ফতেপুরী বেগম । 
সম্রাট শাহজাহানের সিংহাসন লাভের পূর্বের অবস্থা ::::::::::::::::::::
সম্রাট শাহজাহান  অতিশয় মিতাচারী ছিলেন । তিনি মদ্য স্পর্শ করতেন না । তাই সম্রাট শাহজাহান ভবিষৎ সম্রাট হওয়ার সম্বাবনা  ছিল  এবং তিনি সম্রাট জাহাঙ্গীরের  সুতরাং তার পিতার সুনজরে ছিলেন । 
তার উত্তরাধিকারী হওয়ার সকল সম্ভাবনা থকলেও প্রতিবন্ধক হিসেবে দেখা দেয়  নূরজাহান । কারন নূরজাহান  এর প্রথম বিবাহের ঘরের কন্যা সন্তান লাডলী বেঘমের সাথে সম্রাট জাহাঙ্গীর এর পুত্র ও শাহজাহানের সৎ ভাই  শাহরিয়ারের সাথে বিবাহ দেন । পরবতীকালে জাহাঙ্গীর ও তার প্রতি অনুদান ব্যবহার করতে থাকে । ফলে শাহজাহান বিদ্রোহ করতে বাধ্য হন । ১৬২৭ খ্রি. সম্রাট জাহাঙ্গীর  মৃত্যুর পর নূরজাহান তার মেয়ের জামাই শাহরিয়াকে সম্রাট বলে ঘোষনা করেন । শহজাহান  তখন ছিলেন দাক্ষিনত্যে ।এমন অবস্থায় শাহজাহান এর শ্বশুর আসফ খান জামাতার কাছে দূত প্রেরন করেন । শীঘ্রই তাকে রাজধানী (আগ্রায়) আসার জন্য সংবাদ প্রেরন করেন । শ্বশুর আসফ খান জামাতা জন্য সিংহাসন লাভের পথ প্রশস্থ রাখার জন্য খসরুর পুত্র দাওয়ার বক্সকে উপাধি দিয়ে সিংহাসনে বসান । আসফ খান  অমাত্যগনদের সহায়তায় সৈন্য সামন্ত নিয়ে লাহোরে অবরোধ করে শাহরিয়াকে অন্ধ করে দেয়া হয় । শাহজাহান আগ্রায় পৌছানোর পূর্বের আসফ খানকে তার সমস্ত প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যার নির্দেশ দেন । আসফ খান জামাতার মিংহাসনের পথ প্রশস্ত জন্য একে একে সকল প্রতিদ্বন্দ্বীদের হত্যা করে । অবশেষে সম্রাট শাহজাহান ১৬২৮ খ্রি. সিংহাসনে বসেন । সিংহাসন লাভের সহায়তার জন্য শাহজাহান তার শ্বশুরকে প্রধান মন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন ।।
গুজরাট ও দাক্ষিণাত্যে দুর্ভিক্ষ :::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
শাহজাহানের  সিংহাসন আরোহন তিন বছর পর ১৬৩০ খ্রি. গুজরাট ও দাক্ষিণাত্যে এক ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় । এই দুর্ভিক্ষে হাজার হাজার নর-নারী অনাহারে মৃত্যুমুখে পতিত হয় । অভাবের তাড়নায় লোকে নিজের সন্তান বিক্রয় করে । আর নিজ সন্তানের মাংস ভক্ষন করত । এমনকি পিতার কা্ছে পুত্রের মাংস লো্ভনীয় ছিল । মৃতদেহের স্তুপের জন্য রাস্তাঘাটে যাতায়াত করা য়েত না । আবদুল হামিদ লাহোহী লিখেছেন যে, একটুরা রুটির বিনিময় মানুষ আত্মবিক্রয় করতে প্রস্তুত ছিল ,কিন্তু খরিদ্দার ছিল না। এরুপ অবস্থায় শাহজাহান দুর্ভিক্ষ - প্রপীরড়িত মানুষে সাহায্য জন্য  উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করেন----
(১) তিনি দুই রাজ্যের ৭০ লাখ টাকা ভূমি রাজস্ব মওকুফ করেন ।
(২)বুরহান পুর , আহমদাবাদ ,সুরাট, সম্রাট বিনা মূল্যে খাদ্য বিতরন করেন ।
(৩) জনগন সেবার জন্য মনসবদার নিয়োগ করেন। 
#সম্রাট শাহজাহান দাক্ষিণাত্য নীতি ::::::::::::::::::::::::::::::
দাক্ষিণাত্য মুগল আধিপত্য প্রতিষ্ঠা শাহজাহানের  রাজত্বজালে একগুরুত্বপূর্ন ঘটনা ।দাক্ষিণাত্যেনীতি সম্রাট শাহজাহাননে নিজের কোন মৌলিক পরিকল্পনা নয় । পূর্বসরিদের নীতির অনুসরন মাত্র । সম্রাট আকবর ও জাহাঙ্গীর দাক্ষিনত্যের ক্ষুদ্র  ক্ষুদ্র রাজ্য  গুলোতে অভিযান করে ছিলেন কিন্তু দখল করতে পারে নিই । আকবররে মুত্যু পর সম্রাট জাহাঙ্গীর আহমদনগর দখল করতে গিয়ে মুঘল শক্তির অপচয়  করেন । এবং আহমদনগরের প্রধানমন্ত্রী আম্বরের প্রতিরোধের করেন শেষ পর্যন্ত আহমদনগর জয় করতে ব্যর্থ হন । এই সময় দাক্ষিনাত্যের অপর দুটি মুসলিম রাজ্য বিজাপুর ও গোলকুন্ডা নিজ নিজ স্বাধীন অস্তিত্ব বজায় রাখতে সমর্থ হয় । ফলে দাক্ষিনাত্য মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তারের পথ অসমাপ্ত থেকে যায় ।কিন্তু  শাহজাহান নতুনভাবে দাক্ষিণাত্যে । অনেক  ঐতিহাসিক মনে করেন শহজাহান এর দাক্ষিনাত্য নীতির পেছনে রাজনৈতিক করনের সাথে ধর্মীয় কারন যুক্ত ছিল । আবার অনেক ঐতিহাসিক মনে করে এর পেছনে র্ধীময় কোন কারন নেই । 
(১) আহম্মদনগর বিজয়:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
মুঘল সম্রাজ্যের দক্ষিণ সীমান্তে আহম্মদনগরের  নিজামশাহী রাজ্যটি অবস্থিত ছিল । ১৬২৬ A.D
আহমদনগরের প্রধান মন্ত্রী অম্বরের মৃত্যু পর তার পত্র ফতেহ খান  এর স্খলাভিষিক্ত হন । শীঘ্রিই নিজামশাহী সুলতান মুর্তজা নিজামের সঙ্গে ফতেহ খানের বিবাদ শুরু হয় এবং নিতি মুঘলদের সাথে  ষড়যন্ত্র করে সুলতানকে হত্যা করে তার নাবালক পুত্র হুসেন শাহকে সিংহাসনে বসিয়ে রাজ্যশাসন করতে থাকেন । কিন্ত ফতেহ খান মুঘলদের সাথে বুন্ধত্ব  কামনা করেননি । তাই ১৬৩১ খ্রি. মুঘল সেনাপতি মহাব্বত খান আহম্মদনগরের দৌলতাবাদ দুর্গ আক্রমণ করলে ফতেহ খান মুঘলদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে মুঘলদের বিরুদ্ধে তীব্র পতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলেন । কিন্ত মুঘল বাহিনীর কর্তৃক দৌলতাবা অবরুদ্ধ হয়ে পড়লে তিনি ১০ লক্ষ মুদ্রা উৎকোচের বিনিময়ে দৌলতাবাদ দুর্গ
 মুঘলদের কাছে সমর্পন করেন । এভাবে আহম্মদনগর রাজ্যটি মুঘল স্ম্রাজ্যভুক্ত হয় । নিজামশাহী বংশের শেষ নাবালক সুলতান হুসেন শহকে আজীবন বন্দী অবস্থা কালাতিপাত করতেন  হয় । শাহজাহান কৃতকার্যের পুরস্কারস্বরুপ বিশ্বাসঘাতক ফতেহ শাহকে মুঘলদের উচ্চ রাজপদে নিযুক্ত করেন ।। 
(২)গোলকুন্ডা ও বিজাপুরেরে বিরুদ্ধে অভিযান :::::::::::::::::::::::::::::
১৬৩৫ খ্রি . শাহজাহান দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলো দখল  করতে বিশেষভাবে সক্রিয় । এই সময় মারাঠা নেতা  বাজীর শিবাজী পিতা মাহজীর সমর্থনে বিজাপুর ও গোলাকুন্ড পুনরায় নিজামশাহী বংশের প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিলেন । এতে শাহজাহান অত্যন্ত ক্ষুদ্ধ  এবং ১৬৩৬ খ্রি. প্রথমদিকে ৫০০০০সৈন্যের এক বিশাল বাহিনীর দাক্ষিণাত্যে ঘমন করেন । দাক্ষিনাত্যে পৌছেই সম্রাট শাহজাহান বিজাপুর ও গোলকুন্ডা সুলতান মুঘলদের আধিপত্য মেনে দিতে এবং শাহজীর -কে সাহায্য প্রদানের বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করেন । গোলকুন্ডার সুলতান কুতুবশাহ বিশাল বাহিনী নিয়ে সম্রাট যখন উপস্থিত তখন ভীত হয়ে বশ্যতা স্বীকার করেন । কুতুবশাহ সম্রাটকে কর প্রদান এবং সম্রাটের নামে মুদ্রা প্রচলও খুৎবা করতে স্বীকিত হন ।।
ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্যের সুবাদার নিযুক্ত :::::::::::::::::::::::::::::
১৬৩৬ A.D সম্রাট শাহজাহানের তৃতীয় পুত্র  ঔরঙ্গজেবকে দাক্ষিণাত্যের সুবাদার নিযুক্ত করেন  এবং তারপর তিনি দাক্ষিণাত্যে ত্যাগ করেন । এ সময়  ঔরঙ্গজেবের বয়স ছিল ১৮ বছর । সুবাদার নিযুক্ত হওয়ার পর  ঔরঙ্গজেব ৩৪ টি পরগণাসহ বাকলানা দখল করেন  এবং মুঘল অধীনে চাকরি লাভ করেন ।  একবার ভগ্নীর অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর শুনে  ঔরঙ্গজেব তাকে দেখতে আগ্রায় যান । আগ্রায় অবস্থানকালে তিনি রাজদরবারে তার বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠভ্রাতা দারার ষড়যন্ত্র ও বৈরিতা লক্ষ করেন । এর পর চাকরির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ১৬৪৪ খ্রি. পদত্যাগ করেন । পরবর্তীতে পিতার ইচ্ছা অনযায়ী ১৬৫৩ খ্রি. আবার দাক্ষিণাত্যে  সুবাদার এর দায়িত্ব গ্রহন করেন ।  দায়িত্ব গ্রহণ করে লক্ষ করেন  যে, প্রদেশ গুলোতে শাসন ও অর্থথৈতিক ব্যবস্থ বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ছে । কৃষকেরা নানা দুরবস্থার সম্মুখীন হয় । প্রদেশ যে আয় হয়, সুবাদারের ব্যয় নির্বাহর পর তেমন কিছুই  কেন্দ্রে যায় না । কৃষি সংস্কার এর জন্য মুর্শিদকুলি খানকে  দায়িত্ব দেন এবং পরবর্তী মুর্শিদকুলি খানের এ সংস্কারের ফলে প্রজাদের সুখ - স্বচ্ছন্দ্য ফিরে আসে ওসুবার আয় বৃদ্ধি পায় ।। 
শাহজাহানের উত্তর- পশ্চিম সীমান্ত  নীতি  :::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
ভারতের নিরাপাত্তার জন্য উত্তর - পশ্চিম সীমান্তে অঞ্চলের গরুত্ব ছিল অপরিসীম । সত্যিকার অর্থে ভারত চারদিকে ঘিরে রাখলেও কেবল মাত্র উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত বিদেশীরদের জন্য খোলা ছিল । আর এই পথ ধরে প্রচীনকালে ও মধ্যযুগে বিভিন্ন জাতির আগমন ঘটেছে । তাই মুসলিম শাসক গোষ্ঠী সর্বপ্রথম উত্তর -পশ্চিম সীমান্ত নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেন । সুলতান বলবন ও আলাউদ্দিন খলজী এই ব্যবস্থা গ্রহন করেছিলেন । আর মুঘল সম্রাটদের মধ্য প্রথম আকবর উত্তর- পশ্চিম সীমান্তের গুরুত্বের কথা চিন্ত করে কান্দাহার দখল করেছিলেন । কান্দাহার শুধু সামরিক দিক দিয়ে নই বরং  বাণিজ্যক দিক দিয়ে এর গুরুত্ব ছিল । 
সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলের শেষ দিকে কান্দাহার মুঘলদের হস্তচ্যুত হয় । শাহজাহান সিংহাসনে বসে পুনরায় কান্দাহার  উদ্ধার করার ব্যাপারে সচেষ্ট হন । কান্দাহার এর শাসক ছিলেন পারস্য পাতিনিধি  আলী মর্দান খান । সম্রাট কূটকৌশলে আলী মর্দান খানকে নিজ পক্ষি আনার চেষ্টা করেন কিন্তুু ব্যর্থ হয়। অতঃপর সম্রাট কান্দাহার দখলের জন্য সমরিক অভিযান প্রস্ততি গ্রহন করেন ।  এমন অবস্থ আরী মর্দন পারস্য রাজার কছে সাহায্য প্রর্থনা করেন । কিন্তু আলী মরর্দানকে সন্দেহ করে তাকে পারস্য রাজা সাহায্য করে নিই এতে তাদের মধ্য সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাই । শেষ পর্যন্ত আরী মর্দান কোন উপায় না পেয়ে মুঘলদের বশ্রতা শিকার করে ফলে কান্দহার মুঘলদের অধীণে আসেন । আর আলী মর্দানকে কাশ্মীর ও কাবুলের শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করেন । 
কিন্তু সম্রাট বেশী দিন কান্দাহার দখল করে রাখতে পারে  নিই । ১৬৪৮ খ্রি. পারস্যর দ্বিতীয় শাহ আব্বাস কান্দাহার পুনরুদ্ধার করেন । তিনি শীতকালে কান্দাহার অবরোধ করেন । কারন তিনি জানতেন শীতকালে মুঘল সম্রাট কর্তৃক বিরাট সেনাবাহিনী কান্দাহারে প্রেরন করা সম্ভব নয় । মুঘল বাহিনী দুই ম্স ধরে যুদ্ধ চালান ,কিন্তু দিল্লি থেকে কোন সাহায্য না পেয়ে অবশেষে মুঘল বাহিনী ১৬৮৯ খ্রি পারস্য শাহের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন ।সম্রাট শাহজাহান কান্দাহার দখল করার জন্য তিন বার আক্রমন করেন আর বার বার ব্যর্থ হন।
(১) প্রথম বার, সম্রাট কান্দাহার পুনরুদ্ধরের উদ্দেশ্য ১৬৪৯ খ্রি, যুবরাজ ঔরঙ্গজেব ও প্রধানমন্ত্রী সাদুল্লাহ খানের নেতৃত্ব এক বিশাল বাহিনী প্রেরন করেন । মুঘল  বাহিনী কান্দাহার অবোরধ করেন । দীর্ঘ চার মাস যুদ্ধ চলে অবশেষে পারসিক গোরন্দাজ বাহিনীর  কাছে টিকতে না পেরে  পরাজয় স্বীকার করতে হয় । 
(২)দ্বিতীয়বার , সম্রাট তিন  বছর  ব্যপক প্রস্তুতির পর আবার ঔরঙ্গজেব ও সাদুল্লা খানের নেতৃত্ব কান্দাহার বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করেন ।  সম্রাট নিজে কাবুলে উপস্থিত থেকে সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি তত্ত্বাবধান করেন । মুঘল বহিনী দুই মাস ধরে কান্দাহার অবোরধ করলে উহা দখল করতে ব্যর্থ । পরসিক উন্নত গোলন্দাজ বাহিনীর কামানের গর্জন মুঘল বাহিনী সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত হয় ।
(৩) তৃতীয়বার , শাহজাহান অন্ধ পিতৃরেহে দারাকে তৃতীয় কান্দাহার অভিযানের দায়িত্ব ন্যস্ত করেন  এবং তাকে সবচেয়ে শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী দিয়ে সাহায্য করেন ।এই অভিযানে শাহাজাহান দারাকে ৭০০০০ অশ্বারোহী , ৫০০০ পদাতিক , ৩০০০ আহাদীয় , ১০০০০ গোলন্দাজ , এবং ৬০ টি যুদ্ধ হস্তী এবং বিস্তর রসদ দান করেন । সম্রাট যুদ্ধ পরিচালনার জন্য দারাকে এক ল্ক্ষ টাকা প্রদান করেন । মুঘল বাহিনী দীর্ঘ সাত মাস কান্দাহার অবরোধ করে রেখেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ  হয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হন । এর পর শাহজাহান আর কান্দাহার পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেননি । 
উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের নীতির ফলাফল ::::::::::::::::::::::::::
(১) মুঘল রাজকোষের প্রভুত ক্ষতি হয় । যুদ্ধে ১২ লক্ষ টাকা ব্যয় হয় আর অনেক দক্ষ সেনার প্রানহানি ঘটে। 
(২) এই যুদ্ধে মুঘল রাজশক্তির ক্ষমতা ও মর্যাদা বিনষ্ট হয় । মুঘল সেনবাহিনীর  ‍দুর্বলতা এশিয়াবাসীর কাছে প্রকাশ পায় । 
(৩) মুঘল সেনাবাহিনীর দুর্বলতার প্রকাশ পেলে দাক্ষিণাত্যে মারাঠা শক্তি দুর্বার হয়ে ওঠার সুবর্ণ সুযোগ পায । 
(৪) শক্তিশালী মুঘল বাহিনীকে তিন তিনবার পরাজিত করার ফলে পারস্য সম্রাটের মনেও তার রাজ্যসীমা সম্প্রসারণ করার লোভ জাগে । 
শাহজাহানের মধ্যে-এশিয়া নীতি:::::::::::::::::::::::::::::::
শাহজাহানের মধ্য-এশিয়াতে সাম্রজ্য বিস্তারের পেছনে কয়েকটি কারন ছিল --------------------
(১) ১৫৩৮ থ্রি. শাহজাহান কান্দাহারের শাসনকর্তা আলী মর্দানের সহায়তায় কান্দাহার অধিকার করতে সক্ষম হন । কান্দাহার অধিকৃত হলে শাহজাহান রাজ্যবিস্তারের লক্ষ্যে মধ্য-এশিয়ার জয়ের প্রয়োজন ছিল । 
(২)মধ্য- এশিয়ার সমরকন্দ ছিল মুঘলদের পূর্বপুরুষ বিখ্যাত তৈমুর লঙ্গের রাজধানী । সম্রাট বাবর ছিল সমরকন্দের অধিবাসী । হূমায়ুন, আকবর , জাহাঙ্গীর , এই সমরকন্দ দখল করতে গিয়ে ব্যর্থ হন।তাই সম্রাট শাহজাহান দাক্ষিণাত্য অভিযানে সাফল্য লাভ করার  ফলে আরও বিজয়নীতিকে  প্রসারিত করার জন্য পূর্বপুরুষদের আবাস ভূমি মধ্য - এশিয়া জয়ের জন্য বিশেষভাবে তৎপর হয়ে ওঠেন।
(৩)  আফগানিস্তানের উত্তরে বারখ ও বাদাকশান নামক দুটি প্রদেশ ছিল । এই প্রদেশ দুটি শাহজাহানের পূর্বপুরুষদের দখলে ছিল । শাহজাহান এই প্রদেশ দুটি দখল করতে বদ্দপরিকর হন । কারন তিনি জানতেন এই প্রদেশ দুটি দখল করতে পারলে সহজে  সমরকন্দ দখল করতে পারবেন ।।
সুতরাং শাহজাহানের মধ্য-এশিয়ার অভিযানের পেছনে উজবেক জাতির দমন করা তার অন্যতম লক্ষ্য ছিল । 
শাহজাহান প্রথমে বালঘ ও বাদাকশানের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। এ সময় প্রদেশ দুটির বুখারার রাজা নজর খানের অধীনে ছিল । নজর খান ও তার পুত্র আব্দুল আজিজ উভয়েই উচ্চভিলাষী ছিলেন। তারা কাবুল ও গজনীর উপর আধিপত্য স্থাপনের চেষ্টা করলে শাহজাহান ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ।কিন্তু অনতিকালের জন্য পিতা  পুত্রের মধ্য বিরুদ্ধ শরু হয় । এর জন্য নজর খান সম্রাট শাহজাহান এর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করেন । এই সুযোগে শাহজাহান পিতা ওপুত্রের বিবাদ মিটারবার নাম করে বাণঘও বাদাকশান জয়ের উদ্দেশ্য যুবরাজ মুরাদ ও আলী মর্দানের  অধীনে বহু সেন্য সামন্ত  রসদ প্রেরন করেন । মুঘল বাহিনী অতি সহজে প্রদেশ দুটি দখল করেন । মুরাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝতে না পেরে নজর খান পারস্যে পালিয়ে যান এবং পারস্যের শাহের সাহায্য কামনা করেন। কিন্তু পারস্য শাহ সাহায্য করে নিই অবশেষে হতাশা হয়ে নিজ রাজ্যে ফিরে আসেন । অন্যদিকে আব্দুল আজিজ মুঘলদের বিরুদ্ধে উজবেকদের সংঘবদ্ধ করেন । এ সময় মুরাদ পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে পিতার অনুমতি ছাড়া  দিল্লিতে প্রত্যাবর্তন করেন। অতঃপর শাহজাহান ঔরঙ্গজেব ও সাদুল্লা খানকে বুখরায় প্রেরন করেন। সম্রাট নিজেও কাবুলে গমন করেন । এসময় উজবেকরা জতীয়তাবোধের উদ্বুদ্ধ হয়ে মুঘলদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন । ঔরঙ্গজেব কয়েকটি  যুদ্ধে উজবেকদের পরাজিত করতে সক্ষম হলেও শেষ পর্যন্ত উজবেকদের প্রচন্ড বিরোধিতার প ফলে মুঘলদের বালঘ ও বুখারা দখলে রাখা  সম্ভব হয় নিই  ফলে তারা দেশে ফিরে আসেন । এই ভাবে শাহজাহানের পূর্ব পুরুষদের আবাসভূমি অধিকার করার স্বপ্ন ব্যর্থ হয় ।। 
শাহজাহান মধ্য-এশিয়ার নীতি ফলাফল:::::::::::::::::::::
মুঘলদের রাজনৈতিক , সামরিক এবং অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রেই ক্ষতিসাধন করে । এই ব্যর্থতার ফলে একদিকে যেমন মুঘল রাজশক্তির ক্ষমতা ও মর্যাদা ভুলুন্ঠিত হয় তেমন মুঘল রাজশক্তির সামরিক দুর্বলতা  এশিয়াবাসীর কাছে প্রকাশ পায়  । মুঘলদের সামরিক ব্যর্থতার ফলে ভারতে মারাঠারা মুঘলদের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাড়াতে উৎসাহী হয়। কান্দাহারও মুঘলদের হস্তচ্যুত হয় । এর ফলে ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পারস্য মুঘলদের চরম প্রতিদ্বন্দ্বিরুপে আত্মপ্রকাশ করে । এই অভিযানের ফলে মুঘল রাজকোষেরও প্রভূত ক্ষতি হয় । অপরিমিত রাজ্যলিপ্সার মূল্য মুঘল শাসনকে দিতে হয় ।।
Image result for সম্রাজ্ঞী মমতাজ
                                                                      সম্রঙ্গী মমতাজ(১৫৯৪-১৬৩১ খ্রি)
মমতাজ হল নূরজাহানের ভাই আসফ খানের একমাত্র কন্যা। তার বাল্য নাম আরজুমন্দ বানু বেগম । অসামান্য সৌন্দর্যের অধিকারি মমতাজ আগ্রায় ১৫৯৪  A.D জন্ম গ্রহন করেন । ১৬১২ খ্রি. ১৬ বছর বয়েসে সম্রাট শাহজাহান এর সঙ্গে বিবাহ হয় । মমতাজ ছিলেন শহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী কিন্তু শাহজাহান মমতাজকে বেশী পছন্দ করতেন । শাহজাহান মমতাজকে সুগভীরভাবে ভলোবাসতেন।শহজাহান মমতাজেএর পরামর্শ ছাড়া কোন কাজ করতেন না । তার তীক্ষ্ণবদ্ধির ও রাজনৈতিক পারদর্শিতার জন্য শাহজাহান তাকে মালিক- ই- জামান উপাধি ভূষিত করেন । মমতাজ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন । শহজাহান তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন মমতাজ মহল । মমতাজের মৃত্যু পর শাহজাহান সাতরাত কিছু খান নি । ঘর থেকে ও বার হন নি । সাতদিন পর বাইরে বেরোলে শাহজাহানের চুলের রং ধূসর ও মুখ ফ্যাকাসে ছিল । 
মমতাজ মহল ছিলেন সুশিক্ষিত, উদার উন্নতমনা এবং পবিত্র চরিত্রের অধিকারী একজন রমনী । গরীব, বিধবা এবং অনাথ বালক বালিকাদের তিনি ছিলেন আশ্রয়স্থল । তিনি ছিলেন অত্যন্ত  ধর্মপরায়ণা। তিনি নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন এবং রোজা রাখতেন ।
১৬৩১ খ্রি ৩৯ বছর বয়েসে  বুরহানপরে ১৪ তম সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান ।প্রিয় স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি প্রায়  বলতেন , রাজ্য আর কোন মাধুর্য নেই, আমার জীবনে আর কোন মোর নেই । আর ১৪ তম সন্তান ছিল মেয়ে যার নাম রাখা হয় গৌহর বেগম । শাহজাহান তার প্রিয়তম পত্নীর স্মৃতি অমর করে রাখবার জন্য যমুনা নদীর তীরে পৃথীবির বিখ্যাত তাজমহল নির্মান করেন । তাজমহল পৃথীবীর সপ্তম আশ্চর্যের  একটি এবং দাম্পত্য প্রেমের এক অবিস্মরনীয় প্রতীকরুপে কেয়ামত পর্যন্ত বিদ্যমান থাকবে । ।
শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে উত্তরাধিকার দ্বন্দ্ব:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
সম্রাট শাহজাহানের শেষ জীবন দুঃখ দুর্দশা ও অবমাননার মধ্য দিয়ে অতিবহিত হয়েছিল । ১৬৫৭ খ্রি. বৃদ্ধ সম্রাট অসুস্থ হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে সিংহাসন নিয়ে তার পুত্রদের মধ্যে উত্তরাদিকার দ্বন্দ্ব শুরু হয় । উত্তরাধিকার দ্বন্দ্ব ছিল শাহজাহান রাজত্বকালের সবচেয়ে করঙ্কজনক এক অধ্যায় । শাহজাহানের চার পুত্র ও দুই কন্যা জীবিত ছিল । (সন্তানদের সম্পর্কে আগে উল্লেখ আছে )।। জহানারা দারার পক্ষে ছিল আর রওশনারা ঔরঙ্গজেব এর পক্ষে ছিল । 
(১)দারা:::::::::: 
জ্যেষ্ঠপুত্র দারা ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের সর্বাধিক প্রিয় এবং সম্ববত শাহজাহান তাকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছিরেন । দারা পঞ্জাব এর শাসন কর্তা ছিলেন । তবে তিনি পিতার সাথে আগ্রায় অবস্থান করতেন এবং রাজকার্যে  পিতাকে সাহায্য করতেন ।সবসময় পিতার সঙ্গে থাকার ফলে শাসনকার্য, কূটনীতি ও সৈন্য পরিচালনার সম্পর্কে তেমন জ্ঞান লাভ করতে পারে নেই ।কিন্তু দারা বিদ্বান বিদ্যোৎসাহী এবং আকবরের ন্যায় ধর্ম বিষয়ে উদার ছিলেন । ধর্মীয় বিষয়ে দারার উদারতার কারনে মুসলমানরা তাকে সুনজরে দেখতেন না । তিনি ব্যক্তিগত ভাবে ছিলেন দাম্ভিক। এ কারনে  রাজদরবারে অনেক অভিজাতবগেৃর তার প্রতি বিদ্বেষভাব ছিলেন । সুতরাং বলা যায় য়ে, দারার সম্রাট হওয়ার যোগ্যতা ছিল না।।
(২) সুজা::::::::::::::::
দ্বিতীয় পুত্র সুজা ছিলেন বাংলার শানকর্তা । তিনি সহসী কুটকৌশলী এবং মেধাবী ছিলেন । কিন্তু দীর্ঘ কাল বাংলাদেশে আরাম  আয়েশের জীবন যাপন করাই অত্যন্ত অলস হয়ে পড়েন । মদ ও নারী তার জীবন সর্বনাস করেছিলেন । এসব কারনে সুজা সিংহাসনে বসার অযোগ্য ছিলো । 
(৩)ঔরঙ্গজেব::::::::::::::::::::::::
তৃতীয় পুত্র ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্যের শাসনকর্তা ছিলেন । তিনি পুত্রদেন মধ্যে সবচেয়ে সাহসী ছিলেন।সামরিক দক্ষতাও কূটনীতিতে তিনি ছিলেন অদ্বীতিয় । তিনি ছিরেন একজন সুন্নী মুসলমান যার কারনে বেশী সমর্থন লাভ করে ছিলেন । সুতরাং সিংহাসনের জন্য তিনি সবচেয়ে উপযুক্ত ছিলেন।
(৪) মুরাদ:::::::::::::::::::
কনিষ্ঠ পুত্র সুজা ছিলেন গুজরাটের শাসক । তিনি ছিলেন সহসী যোদ্ধ । তিনি ছিলেন দিনের ন্যায় স্পষ্টভাষী, কূটনীতিতে হতাশাগ্রস্ত  , তরবারী চালনায় সিদ্বহস্ত । মদ ওনারী প্রতি অতিরক্তি আসক্তি থাকায় তিনিও সুজার মত অকশৃণ্য পড়েছিলেন । 
শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে উত্তরাধিকার দ্বন্দ্বের কারন ::::::::::::::::::::::::::::::
(১)উত্তরাধিকার আইনের ত্রূটি :::::::::::::::
মুঘল আ্‌ইনে উত্তরাধিকার নির্নয় ত্রূটি ছিলো । অর্থাৎ মুঘল আইন এই রকম যে সিংহাসন লাভের জন্য জোর যার মুল্লুক তার (SURVIVAL OF THE FITTEST ) এই নীতি অনুসৃত হত। বাবর.হূমায়ুন, আকবর, জাহাঙ্গীর ,সকলেই প্রতিদ্বন্দ্বি কিট আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সংঘটিত দ্বন্দ্বে বিজয় লাভ করে সিংহাসন লাভ করে  করেছিলেন ।
(২)দারা প্রতি শাহজাহানের দুর্বলতা:::::::::::::::::::::::::::: 
শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে ঔরঙ্গজেব সর্ব দিক দিয়ে যোগ্যতা সম্পন্ন হরেও জ্যৈষ্ঠ পুত্র দারার প্রতি তিনি দুর্বল ছিলেন। উত্তরাধিকার দ্বন্দ্ব পেছনে এইটা অন্যতম কারন  ছিল । 
(৩)সম্রাট শাহজানের  দায়বদ্ধতা:::::::::::::::::::::: 
সিংহাসন নিয়ে পুত্রদের মধ্যে সংঘটিত গৃহযুদ্ধের জন্য শাহজাহানও কম দায়ী ছিলেন না । সুস্থ হওয়ার পর সম্রাট যদি নিজ হাতে শাসনভার গ্রহন করতেন তাহলে হয়তো পুত্রদের মধ্যে বিবাদ এরানো যেত ।তার উচিত ছিলো মৃত্যু সম্পর্কের গুজব অস্বীকার করে সত্য ঘটনা প্রকাশ করা । তাহলে উত্তরাধিকার দ্বন্দ্ব হত না । 
(৪)দারার স্বৈরাচারী নীতি::::::::::::::::::::::
দারা রাজধানীর সাথে বাইরের সমস্ত সংযোগ বন্ধ করে দেয় । ঔরঙ্গজেবের দূতকেও বন্দী  করে ,তার গৃগ বাজেয়াপ্ত করেন। এই সংবাদ ঔরঙ্গজেবের কানে পৌছালে তিনি প্রতিরোধ গড়ে তোলার স্থির সংকল্প গ্রহন করেন। 
(৫)বাহাদুর গড়ের যুদ্ধ::::::::::::::::::
সর্ব প্রথম বাংলায় শাসনকর্তা শাহ সুজা বাংলার তৎকালীন রাজধানী রাজমহল হতে নিজেকে সম্রাট বলে ঘোষনা করে বিহার অধিকার করেন এবং  আগ্রা অভিমুখে যাত্রা করেন।কিন্তু পথিমধ্যে দারার পুত্র সুলায়মানশিকো বাহাদুর গড় নামক স্থানে  শোচনীয়ভাবে পরাজিত করলে শাহ সুজা বাংলায়  ফিরে যেতে বাধ্য হন। 
(৬) মুরাদ ও  ঔরঙ্গজেবের চুক্তি::::::::::::::::::::::::::::::
মুরাদ নিজের সম্রাট বলে ঘোষনা করেন । কিন্তু ঔরঙ্গজেব তা না করে  সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। ঔরঙ্গজেব কূটকৌশলে মুরাদকে নিজ দলভুক্ত করেন  এবং তার সাথে এক চক্তি স্বাক্ষর  করেন। চুক্তিতে স্থির হয় যে, তারা সথে দারার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেবেন এবং যুদ্ধে জয়ের পর সম্রাজ্য নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নিবে।।
(৭)ধর্মাটের যুদ্ধ::::::::::::::::::::::::::
ঔরঙ্গজেব ও মুরাদের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর উভয়েই রাজধানী আগ্রায় অগ্রসর হয় এবং উভয়েই রাজধানী   আগ্রায়  অগ্রসর হয় এবং উভয়েই রাজধানী নিকটবর্তী ধর্মাট নামক স্থানে উপস্থিত হয়। দারা রাজা যশোবন্ত সিংহ ও কাশিম খানকে তাদের বিরুদ্ধে পাঠান । ধর্মাট ঘাটে উভয় সেনাবহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয় । ধর্মাট যুদ্ধে ঔরঙ্গজেব জয় লাভ করেন ।
(৮) সামুগড়ের যুদ্ধ :::::::::::::::::::::::::::::::
ধর্মাটে যুদ্ধে জয়ের পর ঔরঙ্গজেব ও মুরাদ আগ্রায় অগ্রসর হন । আগ্রা থেকে কয়েক মাইল দুরে সামুগর নামক স্থানে উপস্থিত হয় । দারা ধর্মাটে যুদ্ধে পরাজয়ে অত্যন্ত  হতাশ  হয়ে পড়েন । তিনি রাজপুতদের সহায়তায় ও সৈন্যবাহিনী নিয়ে ঔরঙ্গজেব ও মুরাদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন । সামুগড় নামক স্থানে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয় এবং দারা পরাজিত হয় দারাকে বন্দী করে আগ্রায় আনা হয় এবং মুত্যু দন্ড দেয়া হয় ।।
ঔরঙ্গজেবের সাফল্যের কারন::::::::::::::::::::::::
(১) সম্রাট শাহজাহানের দুর্বলতা ও সিদ্ধান্ত হীনতা ঔরঙ্গজেবের  সাফল্যের প্রধান কারন । 
(২) সমসাময়িক মুসলমান ঐতিহাসিক আরঙ্গজেবের সাফল্যের জন্য তার ধর্মপ্রবনতাকে অন্যতম কারন হিসেবে মত প্রকাশ করেছেন । 
(৩) ঔরঙ্গজেবের সাফল্যের অপর কারন ছিল তার ব্যক্তিগত গুণাবলি ।
(৪)দারার সৈন্য বাহিনীর মধ্যে ঐক্য ও শৃঙ্খলার বড় অভাব ছিল ।যার ফলে ঔরঙ্গজেব সাফল্য পায় । 
(৫) ঔরঙ্গজেবের সাফল্যের প্রধান কারন ছিল তার সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ।
দারার বীর পুত্র সুলায়মানের সাথে তুমুল যুদ্ধ হল সুজার। সুজা হেরে বাংলাই ফিরে যান।আর ঔরঙ্গজেব বন্দি করেন পিতা শাহজাহানকে আর হত্যা করেন রড় ভাই  দারাকে ।আর মেজেও ভাই  মুরাদকে কারাগারে গুপ্ত ঘাতকের হাতে খুন হয় ।আবার  সুজা শক্তি সঞ্চয় করে এগিয়ে আসেন দুই ভায়ের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয় । যুদ্ধে সুজা হেরে যায় তাকে ধাওয়া করেন ঔরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলা । সুজা পালিয়ে আরাকান(মায়ানমার) যাই।ঔরঙ্গজেবের চক্রান্তে ও আরাকান রাজার বিশ্বাস ঘাতকতায় মারা গেলেন সুজা।
#সম্রাট শাহজাহানের  প্রতিষ্ঠিত  শিল্প ও স্থাপত্যে:::::::::::::::::::::::::::::::::::
সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে ভারতে মুঘল শাসনের ইতিহাস স্বর্ণযুগ বলা  হয় । কারন শিল্প ,সাহিত্য ও স্থা পত্য উন্নতির চরম শিখরে উন্নতি হয়েছিল । স্থাপত্যের  ক্ষেত্রে তিনি যেন ভারতবর্ষে বিপ্লব এনেছিলেন ।সম্রাট শাহজাহান ছিলেন একজন মহান স্থাপতি এই জন্য  ঐতিহাসিকরা তাকে The prince of builders  বলে অভিহিত করেছেন । তার স্থাপত্য ভারতীয় ও পারসিক শিল্পে সংমিশ্রণে গড়ে উঠে ছিল। শ্বেতপাথরের ব্যবহার ঘটিয়ে শাহজাহান ভারতীয় স্থাপত্য রীতিকে এক অনুপম সৌন্দর্যে অধিকারী করেছিলেন ।
Related image
দেওয়ান -ই- আম /দেওয়ান-ই- খাস
দিল্লি লালকেল্লার অভ্যন্তরে নির্মিত দেওয়ান-ই - আম /দেওয়ান -ই-খাস ।১৬২৭ খ্রি. শাহজাহান সিংহাসন আরোহন করে  দেওয়ান-ই- আম নির্মান করেন । দেওয়ান -ই-আম এর পেছনে নির্মিত হয় অনুপম শিল্প- শৈলীসম্পন্ন দেওয়ান- ই- খাস।এই দুটি ছিল  জাকজমকপূর্ণ প্রশস্ত হলঘর । দেওয়ান-ই-আম এর গুম্বুজের আকার এমন ভাবে করা হয় যে সম্রাট শাহজাহান আস্তে কথা বলে সব শোনা যেত এবং জায়গা থেকে সম্রাট কে দেখা যেত।দেওয়ান-ই-আম তৈরী জন্য সম্রাট মর্মর পথররের ব্যবহার বেশী গুরুত্ব দিলে ও বেলে পাথরের ব্যবহার পুরোপুরি বাদ দেয় নেই আর দেওয়ান-ই- আম নির্মিত হয় লাল বেলে পাথরে। দেওয়ান-ই- খাস ছিল শাহজাহনের মর্তে এক অনবদ্য সৃষ্টি। এর ছাদ ছিল রূপার পাতে মোড়া এবং এর তিনদিকে মার্বেল, সোনা ও মণি- মুক্তার অলংকার দ্বারা সুসজ্জিত ছিল । সম্রাট শাহজাহান দেওয়ান-ই- খাস -এর সম্পর্কে বলেন দুনিয়ার বুকে যদি স্বর্গ হয় তাহলে এখানে।
Related image
                                       মতি মসজিদ                

সম্রাট শাহজাহান মসজিদটি নির্মাণ শুরু করেন ১৬৪৮খ্রি, আর শেষ হয় ১৬৬২ খ্রি । সম্রাট শাহজাহান অন্তঃপুরিকদের জন্য আগ্রায় প্রসাদ  দুর্গের অভ্যন্তরে শ্বেতপাথরের এই  মসজিদটি নির্মাণ করেন । মতি মসজিদের প্রধান দরজাই ব্রোঞ্জের শোভিত ফুলের নকশা আছে।এই মসজিদটি নিমার্ণ করতে ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়।  বর্তমান মসজিদটি লাহোর দুর্গের পশ্চিম পাশে আলমগিরি গেটের কাছে আবস্থিত।এ্‌ই মসজিদটির গুম্বুজ আছে তিন টি ।মতি অর্থ মুক্তা । এ মক্তা থেকে সম্রাট নামকরন করেন মতি।মসজিদটি নির্মাণ করতে চার বছর সময় লেগেছে।মসজিদটির ডানে তিনটি বড় বড় কামড়া আছে ।
(এই মসজিদটি মুঘল আমল অবনতির পর শিখ শাসক রনজিৎ সিং জোরপূর্বক এটি মন্দিরে রূপান্তিরিত করে ।আর রাষ্টীয় কোষাগার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে । পরবতীৃতে ব্রিটিশ শাসন আমলে পুনরায় মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করা হয় । বর্তমান মতি মসজিদের এলাকাবাসী মনে করন কেউ যদি মতি মসজিদে নফল নামাজ পরে আল্লাহর কাছে দোয়া করে তা পূর্ন হয় ।মসজিদটির নির্দিষ্ট কনো ইমাম নেই।মসজিদটিতে বিদ্যুৎ এর কোন ব্যবস্থা নেই ।আবার অনেকে মনে করেন এই মসজিদে জ্বিন জাতি বসবাস করে)
Related image
দিল্লি জামে মসজিদ(শুরু হয় ১৬৪৪আর শেষ হয়১৬৫৬)

দিল্লি জামে মসজিদ ভারতের কিংবা বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম মসজিদ। মসজিদটির মূল পরিকল্পনা এবং নকশা ওস্তাদ খালিল দ্বারা করা হয়েছিল।এখানে প্রায় এক লক্ষ ধর্ম প্রাণ মুসলমান নামাজ আদায় করে। নামাযের জন্য মসজিদে ৯০০ কাতার করা  আছে ।সম্রাট শাহজাহান ১৬৫৬ সালে মসজিদটি নিমার্ন করেন।মসজিদটি তৈরী করতে ১০ লক্ষ রুপি ব্যয় হয়।এই মসজিদটির সাথে ঔরঙ্গজেব প্রতিষ্ঠিত লাহোরে বাদশাহি মসজিদের সাথে মিল রয়েছে।দিল্লি জামে মসজিদটি নির্মাণ করতে ৫০০০ জন শ্রমিক কাজ করেন এবং ১২ বছর কাজ করেন।তৎকালীন সময়ে শ্রমিকদের ১ পয়সা করে মজুরি দেওয়া হত ।এই মসজিদটি মসজিদ-ই-জাহান-নুমা নামে পরিচিত যার অর্থ জগতের প্রতিবিম্ব মসজিদ। ইমাম বুখারী নামক এক জৈনক ইমাম মসজিদটি উদ্বোধন করেন । এর পর থেকে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছে বুখারি পরিবার ।মসজিদটি গম্বুজ ৩ টি আর মিনার ২ টি ও মিনারের উচ্চতা ৪১ মিটার ।মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪০ মিটার আর প্রস্থ ২৭ মিটার ।জৈন ও হিন্দু পদ্ধতির অনুপ্রেরণায় দিল্লি জামে মসজিদের স্থাপত্য সাজানো হয়েছে। এই মসজিদে দুবার হামলার ঘটনা ঘটেছে।২০০৬ সালে সেখানে বোমা বিস্ফোরন হয়। ২০১০ সালে সালে দিল্লি জামে মসজিদে গোলাগুলি হয়  তবু পর্যটকদের ভিড় রয়েছে ।মিনারে সিড়ি বেয়ে উঠার ব্যাবস্থা রয়েছে।মসজিদটি লাল বেলেপাথর ও সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরী ।মসজিদের উত্তর, দক্ষিন, পূর্বদিকে মোট ৩ টি সুবিশাল গেইট রয়েছে। প্রতিটি গেইটয়ে বিভিন্ন সমাজিক মানুষের প্রবেশপথ চিহ্নিত করত যেমন - উত্তরের গে্‌ইট দিয়ে সম্রাট ও তার পরিবার এবং উচ্চপদস্থ কর্মচারী প্রবেশ করতেন আর দক্ষিণ দিক দিয়ে সাধারন লোক প্রবেশ করতেন ।  মসজিদের মেজেতে জায়নামাযের ন্যায় কালো মার্বেল পাথর দিয়ে ব্লক তৈরী করা হয়েছে । মসজিদের উত্তর পাশে একটি ভবনে রাসুল (সা:)  এর পবিএ স্সৃতি চিহ্ন ও হরিণের চামড়ার উপর লিখা পবিত্র কুরান শরীফের একটি কপি রয়েছে (সূত্র: উইকিপিডিয়া)।। পশ্চিমা পর্যটকদের শরীল ঢাকার জন্য মসজিদ থেকে কাপর দেয়া হয়।মসজিদটির পাচ টি ধাপে পাচটি করে ব্যালকোনি রয়েছে।(বর্তমান বুখারি পরিবারে ১৩ তম উত্তরসরি সৈয়দ আহমদ বুখারি নিয়োজিত আছেন)।
১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের পর ইংরেজগন দিল্লি জামে মসজিদ দখল করে নেয়  এবং সৈন্যদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহার মুরু করে ।এক পর্যায় তারা মসজিদটি ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন কিন্তু মুসলমানদের প্রতিবারোধে মুখে তা সম্ভব হয় নি। ভারতের বুকে দিল্লি জামে মসজিদ মুসলমানদের গৌরবের স্বাক্ষর।।
Image result for দিল্লি পুরাতন  photo
শাহজাহানবাদ(পুরাতন দিল্লি)
সম্রাট শাহজাহান ১৬৩৯ খ্রি, রাজধানী আগ্রা হতে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করেন এবং নিজের নামে এর রাখেন শাহজাহানবাদ। ইহাই বর্তমান পুরাতন দিল্লি নামে পরিচিত । ১৬৩৮ খ্রি. পর্যন্ত এটি ছিল মুঘল সম্রাজ্যর রাজধানী। এই শহরে প্রবেশ করার জন্য ১৪ টি গেইল বানানো হয় ।বর্তমান ৫ টি গেইট অক্ষত রযেছে ।শাহজান এর সময় যে গেইট গুলে বানানো হয় তার নাম হলো -

*দিল্লি গেইট
*কাবলী ””
*রাজঘাট ””
*খিজরী “’”
*নিগামবোধ”””’
*গেলকেঘাট””’””
*লাল”””’””
*কাশ্মিরী””””””
* পাথারকাটি’”’’”””
*লাহোর””’””’’
*আজমীর”””””
*তুরকমান””””””””
এসব গেইটের মধ্যে উত্তর.পূর্ব,দক্ষিণের কিছু গেইট অক্ষত আছে । এসব গেইট শাহজাহানবাদ শহরেরে ইতিহাস তুলে ধরে।এসব গেইট ৫.৬ কি.মি. পর পর বিস্তর্তী ।উত্তর দিক থেকে প্রবেশ করার জন্য কাশ্মির গেইট ব্যবহার করা হত।আর ভারত থেকে কাশ্মির যাওয়ার জন্য সম্রাট শাহজাহান এই গেইট ব্যবহার করতেন ।আজও লোকজন উত্তর দিকে প্রবেশের জন্য এই গেইট ব্যবহার করে ।রবার্ট স্মিথ ১৮৩৫ সালে পুনরায় গেইটি নির্মান করেন।দিল্লি গেইট পুরাতন দিল্লি ও নতুন দিল্লির মধ্য সংযোগ স্থাপন করে ।শাহজাহান ইবাদাতের জন্য জামে মসজিদে প্রবেশ করতেন এই গেইট দিয়ে।পূর্ব দিকে প্রবেশ করার জন্য আজমীর গেইট  ব্যবহার করা হত।শাহজাহান ১৬৪৪সালে এটি নির্মাণ করতেন ।সম্রাট রাজস্তান থেকে আজমীর যাওয়ার জন্য এই গেইট ব্যবহার করতেন ।
হায়দ্রাবাদের প্রথম নবাব ১৮১১ সালে এখানে একটি মাদ্রাসা নির্মাণ করেন।তুরকমান গেইট সম্রাট ১৬৩৯ খ্রি . নির্মাণ করেন এবং সুফী সান হযরত শাহ তুরকমান নাম অনুসারে এর নাম রাখেন । রাজিয়া সুলতানার মাজার ও কালান মসজিদ এই গেইট এর পাশে অবস্থিত।সেই সময় পশ্চিম দিকে প্রবেশ করার জন্য লাহোর গেইট ব্যবহার করা হত  আর লাহোরে প্রবেশ করতো এই গেইট দিয়ে ।
লাল কল্লের  প্রধান গেইট মনে করা হয় এই গেইটকে।বর্তমানে এই গেইট ভেঙ্গে গেছে আর সেখানে
লাহোর বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ।  নিগমবোধ গেইট নিগামবোধ শব্দটি দুইটি সংস্কৃত শব্দ থেকে নেয়া হয়েছে ।নিগাম অর্থ বেদ আর বোধ অর্থ  জ্ঞান ।যুমনার নদীর তীরে এই গেট নির্মান করা হয়েছে ।কাবলী গেইট সম্রাট কাবুলে প্রবেশ করতেন ।এই গেইট খুনি গেইট নামে পরিচিত ।কারন ব্রিটিশ আনেক শাসক এখানে শাহজাদাদের ও সালতানাতদের হত্যা করেছেন
Related image
লালকেল্লা দুর্গ
সম্রাট শাহজাহান আগ্রা দুর্গের অনুকরণে দিল্লীর অনতিদূরে লালকেল্লা তৈরী করেন । লাল বেলেপাথরের তৈরী  সুউচ্চ প্রাচীন দ্বারা বেষ্টিত এই প্রাসাদের বিশালতা আজও বিশ্বে স্থাপত্যবিদদের কাছে শ্রদ্ধার উদ্রেক করে । ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত এই দুর্গটি ছিল মুঘল সম্রাজ্যর রাজধানী ।এরপর ব্রিটিশরা মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে নির্বাসিত করে ভারতের রাজধানী কলকাতা স্থানান্তরিত করে ।১৯৪৭ সাল পর্যন্তু ব্রিটিশরা এই দুর্গটিকে সামরিক ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার  করত ।বর্তমান এটি 
একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র আর ভারতীয় প্রজাতন্রের সার্বভৌমত্বের একটি শক্তিশালী প্রতীক ।২০০৭ সালে লালকেল্লা UNESCO বিশ্বঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে নির্বাচিত হয় ।।(সূত্র;উকিপিডিয়া)
১৬৩৮ খ্রি সম্রাট শাহজাহান সুবৃহৎ এই কেল্লটির কাজ শুরু করেন আর শেষ হয় ১৮৪৮ সালে।প্রথমে এই দুর্গটির নাম ছিল কিলা-ই-মুবারক কারন এই দুর্গে সম্রাটের পরিবার বাস করতেন ।দুর্গটি যুমনা নদীর তীরে অবস্থিত।প্রকৃতপক্ষে লালকেল্লা ছিল দিল্লিক্ষেত্রের সপ্তম নগরী তথা শাহজাহানের নতুন রাজধানী শাহজাহানাবাদের রাজপ্রাসাদ।লালকেল্লায় বসবাসকারী শেষ মুঘল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর ।লালকেল্লা অলংকরণ ও শিল্পকলার অতি উচ্চমানের। পারসিক, ইউরোপীয় ও ভারতীয় শিল্পকলার সংমিশ্রণে সৃষ্ট এই অভিনব শিল্পকলা ব্যঞ্জনাময়, বর্ণময় এবং স্বতন্ত্রতা দাবিদার। ভারতের সরকার কেল্লার রক্ষণাবেক্ষণের ভার স্বহস্তে গ্রহণ করে ।লালকেল্লার অভ্যন্তলীণ স্থাপনাসূমহ
গুলো হল -দিওয়ান -ই-আম, দিওয়ান-ই খাস, নহর -ই- বেহিস্ত,জেনান,মতি মসজিদ, হায়াত বক্স বাগ
প্রভৃতি।।এই কেল্লায় প্রতি বছর ১৫অগাষ্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পতাকা উত্তোলন করেন।।দুর্গের প্রাচীর মসৃণ এবং দৃঢ়। দুর্গের দুটি প্রধান গেইট একটি লাহোর গেইট অন্যটি দিল্লি গেইট ।লাহোর গেইট প্রধান গেইট। এই গেইট দিয়ে ঢুকলে একটি লম্বা আচ্ছাদিত বাজার পথ পড়ে।এর নাম চট্টা চক ।
Image result for ময়ূর সিংহাসন
ময়ূর সিংহাসন
সম্রট শাহজাহনের সিংহাসনের সংখ্যা ছিল ৭ টি । তবে এদের মধ্যে ময়ূর সিংহাসনই ছিল সবচেয়ে আকর্ষনীয় ও জমকালো । ফারসিতে একে বলা হত তখত- ই-তাবুস ময়ূর সিংহাসন নামটি পরে দেয়া হয় ।”তখন ”মানে সিংহাসন, “ই” হল সংযোজন পদ এবং “তাইস” শব্দের অর্থ হল মূয়র ।সিংহাসন নাম ”ময়ূর সিংহাসন” কারন সিংহাসনের পেছনে দুটি ময়ূরের ছবি ছিল , যারা তাদের অনিন্দ্যসুন্দর পেখম ছড়িয়ে দাড়িয়ে ছিল ।ভুবন বিখ্যাত মূরর সিংহাসন সম্রাট শাহজাহানের স্থাপত্য-শিল্পের অন্যতম আর এক শ্রেষ্ঠ নিদর্শন । পারস্য বিখ্যাত শিল্পী বেবাদল খান দীর্ঘ সাত বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই সিংহাসন নির্মাণ করেন। এটি নির্মাণে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল । সিংহাসনের নীচে রত্ন খচিত ময়ূর বাহন হিসেবে সিংহাসনকে পিঠে করে রাখত ।সিংহাসনের মাথায় ছিল পৃথীবির বিখ্যাত কোহীনূর হীরা রত্নখচিত ছাতা। জোড়া ময়ূরের মধ্যস্থলে মুক্তো দিয়ে তৈরী অকৃত্রিম আঙুরের থোকা ঝুলত  এবং মনে হত ময়ূরেরা সেগুলো ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে ।এ এক অভূতপূর্ব শিল্প সৌন্দর্য । সিংহাসনটি লম্বায় ৩ গজ, প্রস্থ ২ গজ এবং উচ্চতায় ৫ গজ ছিল । ১৭৩৯ খ্রি পারস্য সম্রাট নাদির শাহ দিল্লি লুন্ঠনকালে মহামূল্যবান ময়ূর সিংহাসনটি নিয়ে  যান ।১৭৪৭ সালে নাদির শাহ আততায়ীর হাতে নিহত হন । তারপর এই সিংহাসনটির আর কোন খোজ পাওয়া যায়নি ।(সূত্র:দিলীমকুমার শাহা)
 ১৬৬৫ সালে ফরাসি জহুরি টারভেইনার ভারতে আসেন তার কাছ থেকে আমরা মুঘল সম্রাট শাহজাহানের ময়ূর সিংহাসনের বর্ননা জানতে পারি। এটি ছিল অনেকটা বিছানার মতো।  এর চারটি পায়া ছিল যেগুলোর দৈর্ঘ্য ছিল ২০-২৫ ইঞ্চি।সিংহাসনরে উপর ছিল বেশ বড় ধরনের চাদোয়া কিংবা শামিয়ানা ।নিচের একটি ভিত্তি থেকে ১২ টি স্তম্ভ এই শামিয়ানাটি ধরে রাখত।সিংহাসনটি ছিল ১০৮ টি বড়  আকৃতি চুনি পাথর আর ১১৬ টি পান্না দিয়ে।
১৫৮৭ খ্রি. সম্রাট জাহাঙ্গীর রাজত্বকালে পারস্যের সম্রাট আব্বাস তৎকালীন ১ লাক্ষ টাকা মূল্যর একটি হীরা বাদশাহ জাহাঙ্গীরকে উপহার দেন। সম্রাট শাহজাহান এই হীরাটিকেও ময়ূর সিংহাসনে সংযুক্ত করেছিলেন ।
এ সিংহাসনের দাম নিয়ে অনেক মত পার্থক্য আছে। তবে,হিস্টোরি চ্যালেনের মতে, এর বর্তমান মূল্য ১০০কোটি মার্কিন ডলার প্রায় । 
##ময়ূর সিংহাসন শেষ পরিনতি নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে তার মধ্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মতভেদ রয়েছে::::::::::::নাদির শাহ ভারত থেকে অধিকার করেন আনা সমস্ত ধন রন্ত তালাতি নাদির নামে এই দুর্গে রেখে দিয়েছিলেন ।এই দুর্গটি  নদির শাহ বংশে পতনের পর ১৭৪৭ সালে আহমাদ শাহ আবদালী
অধিকারে আসে ।১৭৩৯ সালে আহমাদ শাহ দূররানী খরাছানের রাজধানী মাশহাদ আক্রমন করেন এবং মাশহাদসহ গোটা খরাছান পদাতন করেন এবং তখনই তার হাতে চলে আসেন ময়ূর সিংহাসন ।
এই খরছানের তখন রাজত্ব করতেছেন নাদির শাহ এর পুত্র সারুখ তাকে পরাজিত করার ফলে আপনা আপনি ময়ূর সিংহাসন আহমাদ শাহ আবদালি হাতে চলে আসে । ইতিপূর্বে ১৭৪৭ সালে কোহিনূর তার হস্তগত হয় এবং১৭৩৯ সালে ময়ূর সিংহাসন দূররানীর হস্তগত হয় ।তার প্রমান কেব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় জাদু ঘড়ে সংগ্রহিত আহমাদ শাহ  দূররানীর পুত্র জামান শাহ দূররাণী ময়ূর সিংহাসনে বসে আছেন এমন একটি চিত্র জাদুঘড়ে আছে ।১৮৪২ সালে দূররানীর সাম্রাজ্যের পতনের পর বারাখজাই বংশ আফগানিস্থানের মাসন ক্ষমতা দখল করেন ।স্বাভবিক ভাবে ময়ূর সিংহাসন বারখজাই বংসের হাতে স্থহগত হয় ।বারাখজাই শাসন আমলে আফগানিস্থান একাধিক বার ব্রিটিশদের হমলার সম্মুখিন হয়েছিল এমনকি রাজধাণী পতন ঘটেছিল ব্রিটিশদের হাতে এবং প্রসাদও লুন্ঠন করেছিল। এরপর থেকে আফগানিস্থানে  ময়ূর সিংহাসনরে কোন চিহ্ন আর পাওয়া যাই না। এর কারন ব্রিটিশরা কোন রাজ্য জয় করলে সেই রাজ্যর রাজার সিংহাসন  ভেঙ্গে ধন রত্ন নিলামে বিক্রি করে দিত।তারা এই ময়ূর সিংহাসন ভেঙ্গে ধন রত্ন নিলামে বিক্রি করেছে তার প্রমান যে সাতটি রন্ত দিয়ে ময়ূর সিংহাসন বানানো হয়ে ছিল তা এখন বিভিন্ন দেশের রাজার সিংহাসনে শোভা পাচ্ছে ।
##রঙ মহল:::::::::::::::::
রঙ মহল সম্রাট শাহজাহানের আর এক অনবদ্য সৃষ্টি। এটি ছিল একটি দরবার হল এবং এখানে সম্রাট শাহজাহান  পরিবার পরিজন নিয়ে  ক্লান্তিকর জীবন অবসাদ থেকে আন্দ উপভোগ করতেন । ঐতিহাসিকেরা রঙমহলকে স্বর্গের কল্পিত নন্দনকাননের  থেকেও সুন্দর বলে মতপ্রকাশ করেছেন। রঙ মহলের মেঝে ছিল শুভ্র মার্বেলে পরিবৃত এবং ছাদের নীচে সোনার পাত ব্যবহার করা হয়েছিল। এর চারিদিকে মনি- মুক্তায় সুসজ্জিত ছিল । রঙ মহলের মধ্যে ছিল একটি জলের ফোয়ারা ।সত্তর মাইল দূরে থেকে যুমনা নদীতে বাধ দিয়ে   ক্যানেলের সাহায্যে এখানে জল সরবরাহ করা হত ।
জল সরবরাহের ফলে এই সৌধে এক মোহময় স্বর্গীয় সপ্নিল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল । এজন্য পার্সি ব্রাউন এটিকে “stream of paradise" বলে অভিহিত করেছেন ।                         

Related image
তাজমহল ১৬৩২-১৬৫৩

 তাজমহলটি ভারতে আগ্রায় অবস্থিত ।সম্রাট শাহজাহান সর্বশ্রেষ্ঠ স্থাপত্য কীর্তি হল তার প্রিয়তমা পত্নী মমতাজ মহলের স্মৃতিসৌধ আগ্রার তাজমহল । শিল্প সৃষ্টির দিক দিয়ে ইহা বিশ্বের অন্যতম বিস্ময় বল মনে করা হয় থাকে ।ইহা শুধুমাত্র মুঘল স্থাপত্যে শ্রেষ্ঠত্বকেই প্রমাণ করে না , বরং যুগ যুগ ধরে দাম্পত্যের প্রেমের এক অবিস্মরনীয় প্রতীকরূপে ইহা সামাদৃত ।তাজমহলের নকশা কে করেছিলেন এ প্রশ্নে অনেক বির্তক থাকলেও এটি 
পরিষ্কার যে শিল্পনৈপুণ্যসম্পন্ন একদল নকশাকারক ও কারিগর সৌধটি নির্মাণ করেছিলেন যার উস্তাদ আগমেদ লাহুরির সাথে ছিলেন, যিনি তাজমহলের মূল নকশাকারক হওয়ার প্রার্থীতায় এগিয়ে আছেন। প্রকৃত পক্ষে পরস্যের উস্তাদ ইসা ছিলেন তাজমহলের প্রধান স্থপতি। মূল পরিকল্পনা করেছিলেন শিল্পী ইসফামদিয়ার রুমী । ১৬৩৩ খ্রি তাজমহলের কাজ শুরু হয় আর শেষ হয় ১৬৫৩ খ্রি। সুদীর্ঘ ২২ বছর  ধরে তিন কোটি টাকা ব্যয় করে ২০ হাজার শ্রমিক ও ১হাজার হাতির   অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাজমহলাট নির্মাণ করে।
১৯৮৩ সালে UNESCO বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয় ।

 ১৬৩১ খ্রি, শাহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী মমতাজ এর মৃত্যুতে প্রচন্ডভাবে শোকাহত হয়ে পড়েন। মমতাজ তখন তাদের ১৪ তম কন্যা সন্তান গৌহর বেগমের জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরন করেছিলেন । তাজমহলের নির্মাণ কাজ মুমতাজের মৃত্যুর পর শুরু হয়। মূল সমাধিটি সম্পূর্ন হয় ১৬৪৮ খ্রি. এবং এর চারদিকে ইমারত এবং বাগান আরও পাচ বছর পরে তৈরি হয় ।তাজমহলটি তৈরী হয়েছে  বিভিন্ন নকশার উপর ভিত্তি করে যেমন -গুর-ই-আমির, ইমাদ-উদ-দৌলার মাজার ও দিল্লি জামে মসজিদ প্রভূতি অনুকরণে ।  
তাজমহলের উপরে মার্বেল পাথরের গম্বুজ সমাধির সবচেয়ে আকর্ষনীয় বৈশষ্ট । এর আকার প্রয়া ৩৫ মিটার আর উচ্চতা ৭ মিটার এর আকৃতির কারনে এই গম্বুজকে কখনো পেয়াজ বা  পয়েরা গুম্বুজ বলে ডাকে । গম্বুজের উপর দিক সাজানো একটি পদ্মফুল দিয়ে আর গম্বুজের উপরে একটি পুরনো সম্ভবত তামা বা কাসার দন্ড রয়েছে যাতে পারস্যদেশীয় ও হিন্দু  ঐতিহ্যবাহী অলঙ্ককরন রয়েছে।বড় 
গম্বুজটির চার কোণায় আরও চারটি ছোট গম্বুজ রয়েছে ।ছোট গম্বুজগুলোতেও কাসা বা তামার পুরনো দন্ড আছে ।পদ্মফুল ছোট গম্বুজ ও গুলদাস্তাতেও রয়েছে।বড় গম্বুজের উপর মুকুটের মত একটি পুরনো মোচাকার চূড়া রযেছে । এটি প্রতমে স্বর্নের নির্মিত ছিল, কিন্তু বর্তমানে এটি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি।বড় গম্বুজের উপর চূড়ার চাঁদ এবং তাক করা শিং মিলে একটি ঐতিহ্যবাহী চিহ্নের আকার ধারন করে, যা হিন্দু দেবতা শিবের এর চিহ্নের মত।মুসলমানদের মসজিদের মত চারটি মিনার ও মাথার গম্বুজ নির্মিত।পুরো তাজমহল ১৮০ ফিট উচু ও এর চারটি মিনার যার প্রতিটির উচ্চতা ১৬২.৫ ফুট।
তাজমহল নির্মানের জন্য পাঞ্জাব থেকে আনা হয় স্বচ্ছ মার্বেল পাথর,চিন দেশ থেকে আনা হয় সুবুজ পাথর,তিব্বত  থেকে স্বচ্ছ ও নীল পাথর, শ্রীলংকা থেকে নীল মুণি তাছাড়া ভারত ও পাকিস্থান,পারস্যে 
প্রভৃতি বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৮ রকম মূল্যবান পাথর দিয়ে তৈরি করা হয় তাজমহল।
#প্রফেসর অকের মতে তাজমহলটি সম্রাট শাহজাহন নির্মিত নয় । তিনি বিভিন্ন প্রমান দেখিয়ে বলেন এটি একটি শিব মন্দির ছিল । 
সম্রাট শাহজাহানের সহিত্য::::::::::::::::::::::::::::
সম্রাট শাহজাহান  সাহিত্যর প্রতি পৃষ্ঠপোষক ছিলেন । তার আমলে দুজন ঐতিহাসিক ছিল - আব্দুল হামিদ লাহোরী  ও ইনায়েত খান । আব্দুল লাহোরীর রচিত -বাদশাহনামা আর ইনাতে খান এর রচিত -পাদশাহনামা।
সম্রাট মাহজাহান এর মৃত্যু :::::::::::::::::::::::::::::
শাহজাহনের শেষ জীবন অত্যন্ত দুঃখে অতিবাহিত হয়েছিল ।তাকে দীর্ঘ আট বছর নজরবন্দী অবস্থায়
আগ্রা দুর্গে কাটাতে হয় । বন্দী অবস্তায় সম্রাটের পাশে ছিলেন তার জ্যৈষ্ঠ কন্যা জাহানারা।তিনি কারাগারে সাধারন বন্দীর সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হন । ১৬৬৬ ‍খ্রি শাহজাহান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ৭৪ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।










 


No comments:

Post a Comment