Breaking

Thursday, 26 November 2020

আব্রাহাম লিংকনের জীবনী

আব্রাহাম লিংকন
ভার্জিনিয়ার অতীত কাহিনীঃ
ফোর্ট হ্যারিড নামে একটি জায়গা  ছিলো আমেরিকায়।অ্যান ম্যাকটিন নামের  এক জৈনক স্ত্রী সেখানে বাস করেন।তার স্বামীর সাথে সেখানে বাস করতেন । এই এলাকায় রেড ইন্ডিয়ানরা বসবাস করতেন। তাদের কাছে অ্যান ম্যাকগিনট তাদের কাছে শুয়োর প্রানীটির ও হাস প্রানীর পরিচয় ঘটান।তিনি তাদের বিভিন্ন রকম খাবার বানানোর কৌশল শেখান।ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠল ব্যাপারটা। তার এই চমৎকার কাজের জন্য বহু দূর থেকে লোম আসতো। একসময় রাসালো আলোচনার করার জয়গা হয় তার বাসগৃহে।এই ধরনের জীবন যাপন ছিলো সেই সময় ঘোরতর অন্যায়। অ্যান কৌশলে বিভিন্ন ব্যাক্তির কাহিনী সংগ্রহ করতে লাগলো। নেহাত বিকৃত আনন্দ উপভোগ করা তার  প্রধান উদ্দেশ্য। এমন কি এই ধরনের কাহিনী নিয়ে তিনি আদালতে অভিযোগ জানাতেন।লুসি হ্যাঙ্কস নামে একটি তরুনী বিরুদ্ধে  এই রকম  একটি অভিযোগ আনা হয়।


লুসি হ্যাঙ্কস   ছিলো  দরিদ্র পরিবারে  একজন মেয়ে। হ্যাঙ্কস পরিবারে  ছিলো অত্যন্ত দরিদ্র।লুসি এবং হ্যাঙ্কস পরিবার রবিবারে যথারীতি গির্জায়  প্রার্থনায় জন্য যাতায়াত করতেন। সেই সময় একজন ইংরেজী সেনাবাহিনী লুসি হ্যাঙ্কস এর সাথে অস্বাভাবিক আচরন করেন । সেই সময়  একজন পয়সাওয়ালা খামারের মালিক  সেখানে  উপস্থিত ছিলেন। যুবকটি ছিলেন শিক্ষিত খামার মালিক।যুবটি ছিলো বিবাহিত। সেখানে লুসিকে দেখে তার উদগ্র বাসনা জাগে।  সেই উদ্দেশ্যে নিয়ে খামার মালিক লুসিকে নিজেরে বাড়িতে কাজে লাগানোর প্রস্তাব পেশ করলেন  হ্যাঙ্কস পরিবারের সামনে।সহজেই রাজি হলো হ্যাঙ্কস পরিবার। এভাবেই নতুন এক জীবন শুরু হলো লুসি হ্যাঙ্কসের। লুসি অশিক্ষিত হলেও বুদ্ধি ছিলো চমৎকার। লুসি পাঠাগারের বই পরিষ্কার করার সময় তার পড়াশোনা শিখার প্রতি আগ্রহ জাগে। খামার মালিক তা জানতে পেরে শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে আরো খুসি হলেন। তিনি শিক্ষাদানের সব ব্যবস্থা করে দিলেন। লুসি কখনো ভাবতে পারে নিই সে লেখাপড়া করার সুযোগ পাবে। লুসি অল্প কিছুকালের মধ্যে প্রমান রাখলো সে একজন ভালো ছাত্রী। তার হাতের বড় বড় অক্ষরের নিদর্শন এখনো ভার্জিনিয়ার মহাফেজখানায় রাক্ষিত আছে।খামার মালিক অবকাশে লুসিকে লুসিকে পাশে নিয়ে বিদ্যাচর্চায় সাহায্যে করতেন। এর মাধ্যমে এক পুরুষ এক রমনী কাছকাছি আসার প্রয়াস পায়।তাই জন্ম নিলো দুটি মানব  মনের কোনে  প্রেম নামক আশ্চার্য ব্যাপার। সে খামার মালিককে মনপ্রান অনায়সে সমর্পন করলো  দুহাতে।  যুবতী লুসি ভালোবাসায় আচ্ছন্নতায় ডুবে থাকলেও একদিন চরম এব সত্য আবিস্কার করলো। সে সন্তানের মা হতে চলেছে নানা দিক দিয়ে সে টের পেলে। লুসি সব কথা বলো খামার মালিককে আর বিয়ের প্রস্তাব রাখলো। শেষ পর্যন্ত খামার মালিক তা প্রস্তাব পত্যাখ্যান করলো।তিনি টাকার লোভ  দিয়েখিয়ে লুসিকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করনে। কিন্তু লুসি নিজেরে পরিবারে কাছে চলে আসেন। শুরু হ্যাঙ্কস পরিবারে উপর নির্যাতন। অত্যাচারিত হ্যাঙ্কস পরিবার ভার্জিনিয়া ত্যাগ করে আশ্রয় নেয় ফোর্ট হ্যারড নামের গ্রামে।সেখানে তার পরিবার বলেন লুসির স্বামী মৃত।পুরুষের কাছে তখনও দুর্নিবার আর্কষণ ছিলো লুসি।লুসি ব্যাভিচারিনী হিসেবে এখানে পরিচয় পেল।সেই সময় সেই অ্যান ম্যাকগিনটি তার সম্পর্কে জানতে পেরে ব্যাভিচারিনী বলে অভিযোগ দায়ের করেন আদালতে। লুসির বিরুদ্ধে অবশ্য আদালতের অভিযোগ প্রমানিত হয়নি। তাই মুক্তি লাভ করলো সে।

লুসির জীবনে এক নতুন অধ্যায় শুরু হলো। হেনরি স্প্যারো নামে একজন যুবক লুসিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে । পরবর্তীতে আবার বিয়ের প্রস্তাব দেন কিন্তু লুসি বিয়ের জন্য রাজি হয় নিই। তিনি এক বছর সময় দেয় হেনরিকে কারন লুসি দেখতে চেয়েছিলো তার ভালোবাসা প্রকৃত  ভালোবাসা কিনা।শেষ পর্যন্ত ১৭৯০ সালে নেরির সাথে লুসির সাথে বিবাহ হয়। লুসির প্রবেশ করলো নতুন জীবনে। বিয়েতে আদালতে আদেশ মিলেছেলো। ক্রমে ক্রমে তাদের আটটি সন্তানের জন্ম নেয়। পরবর্তীকালে এই সব সন্তানের মধ্যে কেই কেই উচ্চ পদ লাভ করে। আর লুসির সেই খামার মালিকের ঔরসজাত  কন্যা সন্তানের নাম ছিলো ন্যান্সী হ্যাঙ্কস। এই ন্যান্সী হ্যাঙ্কসের গর্ভে জন্ম নেয় আমেরিকার  অন্যতম সফল প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। অর্থ্যাৎ লুসি হ্যাঙ্কস ছিলো আব্রহাম লিংকনের নানি আর ন্যান্সী হ্যাঙ্কস ছিলো আব্রহাম লিংকনের মা



টমাস লিঙ্কন ও ন্যান্সী লিংকনের বিবাহ , আব্রাহাম লিঙ্কনের জন্মঃ
টমাস লিংকন আর ন্যান্সী হ্যাঙ্কস

ন্যান্সী ছোট  বেলায় আত্মীয়র আশ্রমে প্রতিপালিত হয়েছে।টম ও বেটসি স্প্যারো ছিলেন তার মামা আর মামীমা।তারা খুবই স্নেহশীল। ন্যান্সী  একেবারেই শিক্ষার কোন সুযোগ লাভ করেনি। ন্যান্সী টিপ সই দিতেন, নিজের নাম সই করতে পারতেন না। তার টিপ  সই দলিল আমেরিকার সেই প্রদেশের মহাফেজ খানায় এখনো রয়েছে।তার জীবন চলত প্রায় একাকীত্বে,কৈশোর পার হয়ে  যৌবনে পদার্পন করেন ন্যান্সী। কেন্টাকি অঞ্চলের একজনকে তিনি স্বামী হিসেবে গ্রহন করেছিলেন। তার নাম টমাস লিংকন। তিনি ছিলেন পেশায় মজুর। তার ভাগ্যে লেখাপড়া  জোটেনি। টমাস লিংকন প্রায় স্ত্রীরমত অক্ষর পরিচয়হীন ছিলেন। টমাস এর অপদার্থেরর জন্য বরাবরেই মানুষ কাছে বিদ্রুপের শিকার হতেন। শুধু একটা কজে তার দক্ষতা ছিলো তা হলো হরিন শিকার করে বেড়ানো।তাকে এই জন্য কত রকম জীবিকা যে গ্রহন করতে তার কোন ঠিক নেই। এই জন্য তাকে বিচিত্র ধরনের কাজ করতে হতো। যেমন- জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে গাছ কাটা,বুনো ভালুক ধরার ব্যববস্থা করা, ফাদ পাতপর ব্যবস্থ করা, রাস্তা বানানোয় অংশ নেওয়ার,বাড়ি তৈরির কাজে মজুদ হওয়া, মাঝি হয়ে পারাপার করা ইত্যাদি অসংখ্য কাজ। একজন ছন্নছাড়া মানুষ টমাস লিংকন, অন্যদিকে তেমনি অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের আর ধর্মভীরু একজন স্ত্রীলোক ছিলেন ন্যান্সী হ্যাঙ্কস। টমাস  ছিলেন ভবঘুরে আর খরচপ্রিয় মানুষ। শোনা যায় তিনি সামান্য পুজি করতে পারে নিই দশ বছরে।সত্যি  টমাস একজন বিচিত্র স্বভাবের মানুষ। কারখানায় একটা কাজ জুটে যায় ভাগ্যে ভালো থাকায় টমাসের।টমাস জঙ্গল ছেড়ে কাছাকাছি এক শহরে আস্তানা নিতে হয় এই কাজে যোগ দেওয়ার জন্য। প্রচুর কাঠ নষ্টের জন্য তাকে চাকরী হারাতে হয়।জঙ্গলের মানুষ টমাস শেষ পর্যন্ত শহরের মায়া কাটিয়ে সপরিবার জঙ্গলেই ফিরে যেতে বাধ্য হলেন কিন্তু জঙ্গলেই তার স্থান হলো না।অবশেষে প্রত্যন্ত এলাকার গভরি অরণ্যপ্রদেশে আশ্যয় নিতে হলো একটা ভাঙ্গা কাঠের ঘরে সম্পূর্ন জনবসতিহীন এলাকায়। এই অঞ্চলটি ছিলো কেন্টাকির প্রত্যন্ত এলাকায়।এক সময় সামান্য অর্থ অর্থের বিনিময়ে টমাস কিছু জমি ক্রয় করেন। সেই জমির দাম ছিলো সামান্য সত্তর সেন্টর কাছাকাছি।এমন করেই ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে দুটি নির্জন অরন্যবাসী মানুষের চরম দুঃখু আর দারিদ্রের মুখোমুখি হয়ে দিন কেটে চলেছিল। এই ভাবে তাদের জীবনে নতুন কিছু ঘটনা ঘটে গলে ১৮০৯ সালের ।


টমাস ও ন্যান্সী লিংকনের কোলে জন্ম নিলো এক শিশু। এক রবিবারে শীতার্ত কাকভোরে এক কক্ষ বিশিষ্ট ভাঙ্গা কাঠের তৈরি বাড়িতে জন্ম নেই আমেরিকার মহান রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন। কেন্টাকি রাজ্যের হার্ডিন কাউন্টির দক্ষিনে জন্ম গ্রহন করেছিরেন।তিনি ছিলেন আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট যে আমেরিকার পশ্চিম অংশে জন্ম গ্রহন করেছিলো।টমাসের কুটিরে কোন উপযুক্ত  শয্যা ছিলো না নবজাতক শিশুর জন্য।ভুমিষ্ট শিশুর একমাত্র শয্যা হলো খড়ের বিচালীর শয্যাই।টমাস ও ন্যান্সীর প্রথম সন্তান অবশ্য আব্রহাম লিংকন নই। তাদের প্রথম সন্তান  একটি কন্যা যার নাম সারা লিঙ্কন।আব্রাহাম লিংকনের জন্মের পর তাদের  পরিবারে সদস্য হয় চারজন যার ফলে  সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়।১৮১৬ সালের দিকে টমাস কেন্টাকি এলাকার জমি হরান কিছু লোকরে কারনে তারা সেই জমির দাবি করেন।টমাস বাধ্য হন জমির মালিকানা ছারতে।অবশেষে ইন্ডিয়ানার অরন্যে নতুন করে বাসা বাধে টমাস। যাযাবর টমাস লিংকন প্রায় ১৬০ একরের একটা খামার মালিকানা লাভ করেছিলেন। সেখানে শুধু এক ভাল্লুক শিকারী ছাড়া আর তেমন কোন মানুষজন থাকতো না।ওই এলাকায় বেশ ঘন জঙ্গল ছিলো।অরন্য এলাকার হরিন আর অন্য সব বুনো জন্তুর মাংস  খাদ্য বলতে জুটত টমাস পরিবারের  ।আব্রাহাম লিংকন দীর্ঘ পথ আতিক্রম করে ঝরনা থেকে পানী সংগ্রহ করে আনতো।টমাস পরিবারের দৈনন্দিন খাদ্য ছিলো চারদিকে বুনো গাছের ফল আর বাদমই।আর সব সময় বাবাকে সাহায্য করতেন লিংকন।লিংকনের চেহারা ছিলো শক্তপোক্ত,বালক হলেও,তাই দক্ষ হয়ে উঠেছিলেন তিনি কঠিন কাজেও।দুজনের পরিশ্রমে শেষ পর্যন্ত নতুন কাঠের তৈরী আস্তানা একদিন গড়েও উঠল।টমাস আর আব্রহাম লিঙ্কন কুটির তৈরির সমস্থ কাঠই জঙ্গল থেকে এনেছিলেন।

একদিন সাংঘাতিক ধরনের এক রোগের উৎপাত দেখা দিলো ভার্জিনিয়ার ওই অরন্য।সীমান্ত এলাকার অসংখ্য মানুষ আর পশু মারা  পড়তে শুরু করলো। এই রোগের নাম  দেওয়া হয় মিল্ক সিকনেস। ন্যান্সী আচমকা ওই মারাত্ম ক রোগে আক্রান্ত হলেন। টমাস লিঙ্কন ন্যান্সীর চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা করতে পারলেন না ওই চরম বিপদের দিনে।তখন এই রোগের কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার হয় নাই। বেচারী ন্যান্সী অসহ্য যন্ত্রনায় ছটফট করে চলেছিলেন।ন্যান্সী বুঝতে পেরে ছিলেন সে আর বাচবে না তখন লিংকনকে ডেকে বলেন বনকে যেনো চিরকাল ভালোবেসো,ঈশ্বরের পওতি ভক্তি রেখো, চিকাল যেনো তাকে ডাকতে ভূলো না। এসব কথা বলার পর ন্যান্সী মারা যান।মতৃহারা হয়ে পড়লেন আব্রহাম লিংকন ন্যান্সী হ্যাঙ্কসের ইন্ডিয়ানার অরন্যময় নির্জনে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোলে ঠাই নিলেন। তার কফিন চির সাহিত হলো এই অঞ্চলে। চার্চের ঘন্টাধবনি বা কোন পাদরির কন্ঠনিঃসৃত বানী তার অন্তিম শেষ কৃত্য অনুষ্ঠানে ধ্বনিত হল না।


অনেক গবেষক এই মিল্ক সিকনেস  রোগের সম্পর্কে বিশ্লেষন করেছে তাদের মতে ন্যন্সী যে গাভীর দুধ পান করেছিলো সেই গাভী টি বিষাক্ত কোন ঘাস বা গাছ খেয়েছিলো যার ফলে সেটাই দুধে বিষ ছিলো এবং এই দুধ পানের মৃত্যু হয়েছিলো আব্রহাম লিংকনের মা ন্যন্সী হ্যাঙ্কসের। 


টমাস লিংকনের দ্বিতীয় স্ত্রী আর তার পরিবারঃ
আব্রহাম লিঙ্কনের বিমাতা সারা বুশ লিঙ্কন

ন্যান্সী লিংকনকে সত্যিকার ভালোবাসতেন টমাস লিংকন, তাই তার অকালমৃত্যু তাকে চরম আঘাত দিয়েছিলো।টমাস বাড়ির বাইরে ঘোরাঘুরি করে  সময় কাটাতে লাগেলো। এমনকি তার সন্তানের প্রতি খেয়াল ছিলো না।নিজের পোশাকের প্রতি তার খেয়াল ছিলো না।

ন্যান্সীকে বিয়ে করেননি যখন টমাস লিঙ্কন তখন সারা বুশ জনস্টন নামে একটি মেয়ের  সাথে তার ভাব ছিলো। প্রায় তেরো বছর আগে টমাস তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন কিন্তু তখন  সারা তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো। সারা বিয়ে করেছিলেন ডানিয়েল জনস্টন নামে এক জেলারকে। সারা সেই সময় এলিজাবেথ টাউন বাস ছিলো। সারা স্বামী প্রচুর দেনা রেখে মারা যান।সেই সময় সারার তিনটি সন্তান ছিলো। টমাস ঠিক করলেন সারাকে বিয়ের প্রস্তাব দিবেন। সেই এলিজাবেথের টাউনের দিকে রওনা হলেনা টমাস আর সামান্য কিছু পুজি তাই সঙ্গে নিয়েছিলেন টমাস।টমাস লিঙ্কন সারার কাছে হাজির হয়ে সোজাসুজি বলেন তোমরাও স্বামী নেয় আমারও স্ত্রী নেই এই বলে টমাস বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেন। শোনা যায় সারা টমাসকে  বিয়ের কোন আপত্তি ছিলো না শোধ একটা কারন ছিলো তার আগে তার কিছু দেনা ছিলো তা শোধ করতে  হবে।টমাস তার শেষ কিছু পুজি দিয়ে তার দেনা শোধ করেন। শেষ পর্যন্ত তাদের বিবাহ হলো সারা জনস্টন থেকে সারা লিঙ্কন হয়ে গেলেন। সারা বুশ লিঙ্কন ছিলেন সত্যি একজন দৃঢ় চরিত্রে নারী। টমাস লিঙ্কনের দুই সন্তান সার আর আব্রহামকে নিজের সন্তানের মতোই তিনি আপন করে করে কাছে টেনে নিয়েছিল।

আব্রাহাম লিঙ্কনের শিক্ষাজীবনঃ
 
আব্রাহাম লিঙ্কনের ছোট বেলার ছবি

পরিপূর্ন শিক্ষা লাভ করতে পারে নিই আব্রহাম লিংকন  কোন দিন। কিশোর বয়েসে অর্থাৎ ১৪ বছর বয়েস পর্যন্ত শুধু বর্নমালা চিনতো কিন্তু তখনো লেখা শেখেন নিই। লেখাপড়ার করার জন্য অবশ্য লিঙ্কন কিছু কাল স্কুলে গিয়েছিলেন। তার স্কুল জীবন কেটেছে মোটামুটি ৯ বছর কিন্তু স্কুলের পড়ার দিনগুলো যোগ করলে একবছরের কমই হবে।আব্রাহাম ইান্ডিয়ানার অরন্যে অঞ্চলের স্থানীয় স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন।লিঙ্কন স্কুলে যেতে আরম্ভ করেন ১৮২৪ সালে দিকে।তাকে দীর্ঘ প্রায় চার মাইল পায়ে পথ অতিক্রম করে স্কুলে যেতে হতো। তিনি যে স্কুলে প্রথম ভর্তি হন সেই স্কুলের নাম ছিলো ডোর্সের স্কুল। এই স্কুলের শিক্ষকরা শাস্তি দিতেন হিকরী গাছের দড়ি দিয়ে সকলের পিঠে আঘাত করে। ইন্ডিয়ানার শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন এজেল ডোর্সে ছাড়াও ক্রফোর্ড আর সুইনি। সেই সময় তাদের পাঠ্যক্রম ছিলো জর্জ ওয়াশিংটন আর টমাস জেফারসনের জীবনী ।লিঙ্কনের বীরত্বে কাহিনী ভালো লাগতে। লিঙ্কনের হাতে লেখা ছিলো চমৎকার মুক্তোর মতো সুন্দর। তার কোন পেন্সিল বা লেখার কাগজ জুটতো না। কাগজের অভাব লিঙ্কন মেটাতে কাঠের বোর্ডের উপর কাঠ কয়লার সাহায্যে লিখতো।

স্কুলে যেতে ভালো লাগতো বলে লিঙ্কন প্রত্যেকটা মূলবান দিন কাজে লাগাতেন, তিনি সবার আগে স্কুলে পৌছতে আর সকলকেই লেখাপড়ায় পিছনে পেলে যেতেন।তার মোত ভালো বানান কেউ করতে পারতো না।অঙ্ক বই না থাকায় ধার করে বই এতে লিঙ্কন রাতের রাতের পর রাত জেগে সেই সব অঙ্ক টুকে নিতেন। অঙ্ক বই অত্যন্ত দামি বলে তার কেনার সামর্থ্য ছিলো না।তবুও তার অদম্য উৎসাহে ভাটা পড়েনি কোন সময়ে।লিঙ্কনের কবিতা লেখার প্রতি খুব আগ্রহ ছিলো। এইভাবে চলছিলো আব্রহাম লিংকনের শিক্ষা জীবন । পাচ বছর পরে তিনি অন্য কোন স্কুলে গিয়েছিলেন কিন্তু দরিদ্রের কারনে তিনি আর পড়াশোনা করতে পারে নিই। 
আব্রাহাম লিঙ্কনের পড়াশোনার একটি চিত্র


এই সময় লিঙ্কনের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন টমাস রিঙ্কনের দ্বিতীয় স্ত্রী, লিঙ্কনের বিমাতা।নানা জিনিসপত্রের সঙ্গে লিঙ্কন জন্য নানা বিষয়ে বই আনতে ভুলতেন না তিনি।এই সব বই  লিঙ্কনকে মুগ্ধ করে তুলেছিলো।এই সব বইয়ের মধ্যে তার প্রিয় বই ছিলো-ঈশপের গল্প,রবিসন ক্রশো,পিলগ্রিমস প্রোগ্রেস,তাছাড়া তার নাবিক অ্যাডভেঞ্চার কাহিনী খুব ভালো লাগতো।যখনই সুযোগ পেত লিঙ্কন প্রায় বই মুখস্ত করে ফেলতো। তার স্মৃতি শক্তি ছিলো প্রখর।
 
আমেরিকার দুই প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের আর আব্রহাম লিংকনের সাথে অদ্ভত রকেরম শিল ছিলো যেমন-
(১) দুজনেই ছিলো দীর্ঘকায়,ওয়াশিংটন ছয়ফুট এক ইঞ্চি ছিলো আর আব্রাহাম লিংকন ছিলো ছয় ফুট  চার ইঞ্চি।

(২)দুজনেই যৌবনে খেলোয়ার হিসেবে নাম করেছিলেন।

(৩) আবার বলা বাহুল্য দুজনেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।

(৪)দুজনেই ছিলেন প্রকৃত সৎ মানুষ।  

 বই পড়া যেনো আব্রহাম লিংকনের নেমার মতোই পেয়ে বসেছিলো। কিন্তু বই কেনার সামর্থ্য তার ছিলো না বলেই তিনি লোকজনের কাছ থেকে পত্রপত্রিকা আর নানা ধরনের বই চেয়ে আনতেন।এই পড়াশোনা ফাকে লিঙ্কন করতেন কঠিন পরিশ্রম।তিনি তার বাবা টমাস লিঙ্কনকে জঙ্গলে কাঠ কাটতে মাঠে চাষ করতে বীজ বুনতে আর ফসল সংগ্রহ করতে নিয়মিত সাহায্যে করতেন।এই খানা বই পড়ার জন্য মাইলের পর মাইল হেটে যেতে তার কোন আপত্তি ছিলো না। তিনি নিজেই একজন বন্ধুকে বলেছিলেন তার  কোন বইয়ের জন্য পঞ্চাশ মাই হাটতে কোন  আপত্তি নেই।

ন্যায়ের প্রতিও ছিলো তার আন্তরিক টান,আর এই কারনেই তিনি আইন ব্যবসার দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। অনেক সময় আদালতে হাজির হতেন  লিঙ্কন। মামলা চলাকালীন সময় তার বিচার কার্য প্রশ্ন তাকে  খুব আগ্রহী করে তুলে।এই কারনে তিনি মাইলের পর মাইল হেটে আদালতে হাজির হতেন।

উনিশ বছর বয়সে সময় লিঙ্কনের দীর্ঘ দেহের অধীকারী হয়। তার উচ্চতা দ্বারাই ছয় ফুট চার ইঞ্চি।তার দুই হাত আর পা ছিলো অস্বাভাবিক রকম বড়। তার দেহিক ক্ষমতা ছিলো অস্বাভাবিক, প্রায় তিনজন মানুষের মতো। তিনি অনায়েসে বড় বড় দুটি কাঠের গুড়ি দুই হাতে তুলে নিতে পারতেন। লিঙ্কন পড়শীদের জন্য চাষাবাদ কাজ করে দিতেন,শুয়োর জবাইয়ের কাজও করতেন এইজন্য তার প্রাপ্য ছিলো মাত্র একত্রিশ সেন্ট।

এই সময় লিঙ্কন উল্লেখযোগ্য দুটি বই পড়েছিলেন তা হলো-রিভইজড লস অব ইন্ডিয়ানা আর দি কলম্বিয়ানা ক্লাস বুক। তিনি প্রথম বই থেকে জানতে পারে উত্তরঞ্চলের দাসপ্রথা সম্পূর্ন বেআইনী। আর লিঙ্কন দ্বিতীয় বই থেকে জানতে পারে চিন্তা শক্তিকে পরিধিকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ছাড়িয়ে বাইরের জগতেও পরিব্যপ্ত করে। এই  বই থেকে বিভিন্ন ভৌগোলিক জ্ঞান সম্পর্কে জানতে পারে।
 

মিসিসিপির নদীর প্রান্তে আব্রাহাম লিঙ্কনঃ
 
আব্রাহাম লিঙ্কনের কাঠ চেরাইয়ের চিত্র

লিঙ্কন বলেছেন আমার  স্বীকার করতে লজ্জা নেই যে আমার  শৈশব ও কৈশোর অনেক কষ্টে কেটেছে।কখনও আমি ভাড়াটে মজুরের কাজ করেছি,কখনও কাঠ চেরাইয়ের কাজ,আবর কখনও মালবাহীর নৌকার মাল্লার কাজ করেছি।তিনি সারা জীবন জলযান আর নদীতে নৌতে নৌচালনায় বিশেষভাবেই আগ্রহ বোধ করেছেন। ১৮২৮ সালে মাত্র উনিশ বছর বয়সে লিঙ্কন দায়িত্ব পেয়েছিলে পড়শীর বিশাল একখানা তলাচ্যাপ্টা নৌকা তৈরী করে তাতে ফসল বোঝাই করে নিয়ে যেতে।নৌকায় ছিলো নানা ফসল আর শুয়োরের মাংস।তিনি এই ভেলার মতো নৌকা চালিয়ে প্রায় ১৮০০ মাইল দূরে মিসিপিসি নদী পেরিয়ে নিউ অর্লিয়েন্সের তুলোর খামার মালিকদের কাছে বিক্রি করার জন্য। লিঙ্কনের দৈনিক আয় ছিলো মাত্র একত্রিশ সেন্ট।জেমস টেলার নামে একজন কাছে কাজ করেন লিঙ্কন।একদিন এক ডলার আয় ছিলো তার কাছে চরম আর আনন্দের ।  
  
১৮১১ সালে থেকেই মিসিপির নদীর বুকে বাষ্পীয় নৌকা প্রচলন ছিলো।লিঙ্কন মনে প্রানে তার কাজ করছিলেন।সঙ্কলের যাত্রা পথে একদিন ঘুমনোর অবসেরে  সাতজন নিগ্রো মালপত্র লুঠ করার উদেশ্যে লিঙ্কনের নৌকা আক্রমণ করেন। লিঙ্কনের সাথে তাদের প্রচন্ড মারামারি হয় তিন জন জলে ছিটকে পড়ে।আর মরামারির মধ্যে এক গুন্ডার ছরির আঘাতে লিঙ্কনের কপাল কেটে দরদর করে রক্ত ঝরতে শুরু করেছিলে।শেষ পর্যন্ত আক্রমনকারীরা পালাতে বাধ্য হয়।  

ইলিনয়ের দাস ব্যবসাঃ

১৮৩০ সালের  দিকে টমাস লিঙ্কন নিজ বাস স্থান ত্যাগ করে রওয়না হলেন ইলিনয়ের দিকে।টমাস পরিবার ইলিনয়ে পৌছিয়ে সতুন করে ঘর তৈরী করলেন ।সেই সময় তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছিলে ১৩ জন। লিঙ্কন শুধু ঘর বানানোর কাজেই ব্যাস্ত ছিলো না জীবন ধারনের জন্য সে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। কাঠ চেরাই করা, ঝোপঝাড় জঙ্গল কেটে সাফ করে ,আগাছা পরিষ্কার করে কয়েক একর জমিতে লাঙ্গল দিয়ে চাষাবাদ করতো।

ডিকেটুরের কাছাকাছি ওই  এলাকায় শীতকালে দুঃসহ শীত ছিলো।১৮৩০ সালে বড়দিনের সময় শুরু হয়েছিলো তুষারপাত। প্রচন্ড বাতাস আর চোখ ধাধানো তুষার পরেছিলো এই সমস্ত এলাকায় ।এতো পরিমান তুষার পরেছিলো যে পেইরী ঘাসের প্রান্তরে  ১৫ ফুট উচ্চ ছিলো বরফ। এই সময় লিঙ্কনের বাড়ির কাছাকাছি এসে অনেক মানুষ তুষার ঝড়ের কবলে পড়ে প্রান হারায়। আরো মারা যায় গরু,ভেড়া,শুয়োর,হরিন প্রভৃতি গবাদি পশু।সমস্ত ইলিয়ান সীমান্ত জুরেই চলল “সাদা শত্রর” তীব্র আক্রমণ।

লিঙ্কনের জীবনে একটি অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনা তাকে প্রচন্ড ভাবে নাড়া দিয়ে বিচলিত করেছিলো। সেই ঘটনা হল লিঙ্কনের নিজের দেখা নিগ্রো ক্রীতদাস বিক্রি।এই ঘটনার উৎস ছিলো নিউ অর্লিয়েন্সের দাস বেচাকেনার এক হাট।লিঙ্কন দাস  কেনাবেচার যে হাটে উপস্থিত হন সেদিন এক সুন্দরী নিগ্রো যুবতীকে বিক্ররি উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়েছিলো। ক্রেতারা গু ছাগল কেনার মতই সেই হতভাগিনী যুবতীর নানা গোপন অঙ্গ যাচাই করে দেখেছিলো। এই চরম অবমাননাকর দৃশ্যে সেদিন শিহরিত হয়ে উঠেছিলো লিঙ্কনের মন।

আব্রাহাম লিঙ্কনের রাজনৈতিক জীবনের সূচনাঃ

দাস বেচাকেনার ঘটনার পর লিঙ্কন কাজ খোজতে শুরু করেন নিউ অর্লিয়েন্সের একজন দাম্ভিক ব্যবসায়ীর কাছে কাজ পেলেন।লিঙ্কনের সঙ্গে তার চুক্তি হলো বিশাল কোন তলাচ্যাপ্টা নৌকা বানিয়ে কাজ করতে হবে।এ জন্য তিনি পাবে মাসে বারো ডলার।তাতেই রাজি হয়ে গেলেন লিঙ্কন।শুরু হলো তার নতুন কাজ আর অমানুষিক পরিশ্রম।

লিঙ্কন যে ডেন্টন অফফুটের দোকানের কাজ করতেন তারই কাজে ছিল এক শুড়িখানা। শুড়িখানাটি ছিলো নিউ অর্লিয়েন্সের থেকে কিছু দূরে নিউ সালেম একটি গ্রামে। দোকানটি ছিলো নিই সালেমেই।সেখানে লোকসংখ্যা একশর বেশী ছিলো। নিউ সালেমের শুড়িখানায় সব সময় চলত গুন্ডা বদলোকের আড্ডা।তাদের কাজ ছিলো সবসময় দাঙ্গহাঙ্গমা করা।এই শুড়িখানার  মালিক ছিল ক্ল্যারি নামে একজন।তিনি জানতেন লিঙ্কনের শারীরিক ক্ষমতা ছিল প্রচুর।তখন তিনি ঘোষনা দেন কেউ যদি লিঙ্কনকে  মল্লযুদ্ধে হারাতে পারে তাহলে তাকে পাচ ডলার পুরস্কার দিবেন। তখন জ্যাক আর্মস্ট্রং লিঙ্কনের সাথে মল্লযুদ্ধ করতে রাজি হয় এবং যুদ্ধে আর্মস্ট্রং পরাজিত হয় । তখন থেকে জ্যা আমস্ট্রং আর তার স্ত্রী হানার সাথে লিঙ্কনের অকৃত্রিম বুন্ধ গরে উঠে।এই সময় থেকে জ্যা আর্মস্ট্রং সব সময় লিঙ্কনের পাশে ছিলো রাজনৈতিক ব্যাপারেও তার সাথে ছিলো।নিউ সালেমের থাকার সময় লিঙ্কনের স্থানীয় দুই জনের ব্যাপক সম্পর্ক গরে উঠে। তারা হলো স্কুল শিক্ষক মেন্টার গ্রাহাম আর একজন কেলসো। মেন্টার গ্রাহাম লিঙ্কনের সুপ্ত প্রতিভা বুঝতে পেরে তাকে ইংরেজী আর  অঙ্ক শেখাতে শুরু করেন।
 
আব্রাহাম লিঙ্কনের সভায় বক্তবের একটি চিত্র

এই ভাবে এক সময় মেন্টাল গ্রাহাম উদ্যোগে একটি বিরাট সভার আয়োজন করেন।তার উদ্দেশ্য ছিলো জনসভায় লিঙ্কনের বক্তব শুনানো।আর একটি উদ্দেশ্যো ছিলো আব্রাহাম লিঙ্কনের রাজ্য বিধান মন্ডলীর আগামী নির্বাচনে প্রতিনিধি হিসাবে দাড় করানো। সভাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৮৩২ সালে লিঙ্কন অত্যন্ত আত্মনির্ভরতার সঙ্গে নির্বাচনে অংশ গ্রহনের কথা জানালেন।তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন অতি জনপ্রিয় আ্যান্ড্র জ্যাকসন।লিঙ্কন কিছু বিষয়ের উপর বক্তব দেন তা হলো--

(১)দেনার উপর সুদের হার কমিয়ে আনা

(২)লেখাপড়া শেখার জন্য সঠিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

(৩)যাতায়াতের সুবিধার জন্য স্যাংগামের নদীর ধারাকে সোজা পথে প্রবাহিত করার ব্যবস্থা।

(৪) ন্যায় বিচারের ব্যবস্থা করা।

নির্বাচনী প্রচারের সময় একটি বিচিত্র ঘটনা ঘটে। “ব্ল্যাকহক” নামে এক দুধর্ষ রেড  ইন্ডিয়না তাদের দলবল নিয়ে  প্রায় চারশত সৈন্য নিয়ে ছুটে আসছে নিউ সালেম এলাকার দিকে। তাদের উদ্দেশ্যে ছিলো শ্বেতকায়দের উচ্ছেদ করতে। এমন সময় নিউসালেম লোক জনরে মাঝে ভীত সঞ্চায় হয়। তখন গভর্নর বেনল্ডস তাদের মোবাবিলা করার জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর গঠনের জন্য আবেদন করেন এবং সে বাহিনীর নেতা হবেন আব্রাহাম লিঙ্কন। আর তার সহকারী ছিলেন জ্যাক আমস্ট্রং। শেষ পর্যন্ত তাদের সাথে ঘাতক বাহিনীর সংঘর্ষ হয় নি কারন।কারন সরকারি সেনা দল তাদের বন্দী করেন।

এরপর লিঙ্কন আবার নির্বাচনের প্রচার চালতে থাকেন আর বিভিন্ন জয়গায় বক্তব দিতে থাকেন যেমন-তিনি বলে আমি যা চাই তা হলো অভ্যন্তরীন উন্নয়ন,একটি জাতীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, মানুষের জীবনের সুযোগ সুবিধা আর শিক্ষা বিস্তার ঘটানো। কিন্তু নির্বাচনে লিঙ্কন পরাজিত হন।পরাজিত হলেও নিউ সালেমে প্রচুর ভোট পান এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠেন খুব অল্প সময়ের মধ্যে।
অবশ্যে এই নির্বাচনের দুই বছর পর লিঙ্কন নির্বাচনে জয়ী হন তারপর ১৮৩৬,১৮৩৮,১৮৪০, পরপর নির্বাচনে জয়ী হন। এই ভাবে আব্রাহাম লিঙ্কন রাজনীতি জীবনের সূচনা করেন।

আব্রাহাম লিঙ্কনের প্রথম প্রেম ও তার কাজের ভিন্নতাঃ

নিউ সালেমে রুটলেজ টেভার্নের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জেমস রুটলেজ নামে একজন ভদ্রমানুষ।রুটলেজ টেভার্ন ছিলো একটি সরাইখানা। এই জেমস রুটলেজের একটি উনিশ বছরের কন্যা ছিলো। মেয়েটির নাম ছিলো অ্যান রুটলেজ।মেয়েটি ছিলো সত্যিকারের সুন্দরী,নীল চোখের অধিকারী আর তার মাথার চুল ছিলো সোনালী কোকড়ানো।লিঙ্কন অ্যান রুটলেজকে প্রথম দর্শনে ভালোবাসতে আরম্ভ করেন।অবশ্য লিঙ্কন জানতেন যে অ্যান রুটলেজের স্থানী এক পয়সাওয়ালার যুবকের সাথে বিবাহ ঠিক হয়ে আছে তার পড়াশোনা শেষ হলে তাদের বিবাহ হবে। যুবটির নাম ম্যাকনামারা। ম্যাকলীন তার স্থানী ব্যবসাপত্র বিক্রি করে নিউ ইয়র্কে পাড়ি দেন আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে আর অ্যান রুটলেজকে বলে যান অতি দ্রুত চলে আসবে এবং তাকে চিঠি পাঠাবে। কিন্ত ম্যাকলীন অ্যান রুটলেজের কোন খোজ খবর নেই আর কোন চিঠি পত্র দেয় নিই।এই ভাবে প্রায় তিন বছর কেটে যায়।

এই সময় লিঙ্কন নিউ সালেমের ডাকঘরে পোস্টমাস্টারে কাজ পেরেছেলেন।সপ্তাহে দুই বার ঘোড়ার গাড়িতে ডাকের চিঠি পত্র আসতো। অ্যান রুটলেজ তখনো খোজ করতো ম্যাকলীনের কোন চিঠিপত্র এসেছে কিনা।এমনি করে সময় অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন ম্যাকনীল চিঠি এলো সে জানালো সে আর নিউ সালেমে ফিরে আসতে পারবে না। অ্যান তখন বেদনায় ভেঙ্কে পরলো।লিঙ্কন দারুন আঘাত পেরেছিলো অ্যানের দুঃখে। এর পর থেকে লিঙ্কন সব সময় অ্যান রুটলেজ সব সময় পাশাপাশি থাকতো এবং তাকে নানা কাজে উৎসাহ দিতো।এই ভাবে লিঙ্কন আস্তে আস্তে আ্যান রুটলেজের মনে জায়গা করে নিলো।অ্যান  রুটলেজের প্রেমময় ব্যবহারে লিঙ্কন বুঝতে পারে যে তাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে ।সেই সময় নিউ সালেমে অনেকেই তাদের প্রেমের কথা জনতো।

 অ্যান রুটলেজ মৃত্যু ও লিঙ্কনের পরিস্থিতিঃ

লিঙ্কনের সাথে অ্যান রুটলেজে প্রায় দেখা হয় তারা দুজনে গ্রীস্মের উষ্ণতা স্যাংগামন নদীর তীরে প্রাকৃতির দিগন্তে ঘুরে বেড়াতো। তারা অনেক সময় গাছের নীচে বসে গল্পসল্প করতেন। লিঙ্কন অ্যানার নীল চোখের প্রতি অতি আকৃষ্টি ছিলেন।

লিঙ্কন এক মাতাল বেরী সাহায্যে সহযোগিতায় নিউ সালেমে একটি দোকান দিলেন।একবার কিছু লোক তার দোকেন বিশ্রামের জন্য আসলেন তাদের সাথে অনেক মালপত্র ছিলো। মালগুলো বড় কাঠের বাক্সে। তার কিছু মাল পত্র লিঙ্কনের কাছে মাত্র পঞ্চাশ সেন্টে বিক্রি করেন। এই কাঠের বাক্সে ছিলো ব্ল্যাকস্টোনের লেখা আইন বিষয়ক রচনাবলী। এই রচনাবলী লিঙ্কন সবগুলো পড়ে ফেলেন। ব্ল্যাকস্টোনের  আইন রচনাবলি লিঙ্কনের উদ্ভব করেছিলো।সে মনে মনে ঠিক করলো আইন পড়বে।সে অ্যানাকে জানাবে বলে মন স্থির করলেন । অ্যানাকে জানানোর পর অ্যান আনেক খুশি হয়। তারা দুজনে ঠিক করে আইন পাশ করার পর তারা বিয়ে করবে। লিঙ্কন ঠিক করলেন আইন অধ্যয়ন করতে  স্প্রিংফিল্ডে যাবেন।

লিঙ্কন সে দোকান করেতেন তার অবস্থা শোচনীয় হয়ে পরে।বেরী সারাদিন সুরাপান করতেন। এইভাবে একদিন বেরী মারা যান।দোকানের ১২০০ ডলার দেনা লিঙ্কনের উপর এসে পড়ে যার ফলে লিঙ্কনকে সে দেনা শোধ করতে হয় । এই দেনা শোধ করতে লিঙ্কনের প্রায় ১৫ বছর লেগে যায়।

এরপর একটি ঘটনা ঘটলো। জেমস রুটলেজের সেই বিখ্যাত সরাইখানা ক্রমে ক্রমে বন্ধ হয়ে গেলো। খুব কঠিন অবস্থায় পরে গেলো রুটলেজ পরিবার,এমন অবস্থায় দাড়া যে অ্যানকে কোন খামারে রান্নার কাজ করতে হতো।লিঙ্কন অ্যানকে খামারের কাজ করতে সাহায্যে করতেন। কাজের ফাকে ফাকে তাদের দেখা হতো।তাদের এই প্রেম বেশী দিন বিধাতা সহ্য করলো না। আচমকা অ্যান রুটলেজ খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ল,দীর্ঘ দিন জ্বরে থাকার ফলে তার শরীর ক্রমস খারাপ হতো লাগলো।শেষ পর্যন্ত বহুদূর থেকে ডাক্তার আনা হলো, অ্যানকে ডাক্তার পরীক্ষা নীরিক্ষা করার পর জানালো তার টাইফয়েড রোগ হয়েছে।সেই সময় টাইফয়েডের কোন প্রতিষেধক ঔষুধ ছিলো না।অ্যান অসহ্য জ্বরের যন্ত্রনায় বার বার লিঙ্কনের নাম নিতো।এরপর একদিন পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো অ্যান রুটলেজ।

লিঙ্কন এই শোকে প্রায় উন্মাদ হয়ে পড়ে।সে ঠিক মতো গুমাতো না।লিঙ্কন কারো সাথে কথাবার্তা বলতো না।সে প্রায় মানসিক ভারসাম্য হারাতে বসলেন লিঙ্কন।লিঙ্কন অ্যানের জন্য এতোটাই পাগল ছিলো যে দীর্ঘ পাচ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে তার সমাধি ক্ষেত্রে গিয়ে লিঙ্কন ঘন্টার পর ঘন্টা চোখের জল ফেলতেন।নিউ সালেমে লিঙ্কনের বন্ধু ছিলেন বোলিং গীন। লিঙ্কনের এই অবস্থা দেখে গ্রীন জোর লিঙ্কনকে তার বাড়িতে নিয়ে গেলো। সেখানে লিঙ্কন গাছের পরিচর্যা কাজ করতেন যার ফলে মানসিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলো।এই ভাবে লিঙ্কন অ্যানের শোক কাটিয়ে তুলে।

স্প্রিংফিল্ডে লিঙ্কনের আইন ব্যবসা আর মেরী টডের সাথে দেখাঃ

প্রেমিকার মৃত্যুতে আব্রহাম লিঙ্কন নিউ সালেমে অতিষ্ট হয়ে উঠেন।তারপর লিঙ্কন ১৮৩৭ সালে আটাশ বছর বয়েসে একদিন ঠিক করলেন আইন ব্যবসা করবেন তাই তিনি স্প্রিংফিল্ডে যাওয়ার জন্য রওনা হলেন।সেখানে স্পীড নামে এক ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে বসবাস শুরু করেন।বাটলার  লিঙ্কনকে সেই সময় প্রচুর অর্থ  দিয়ে সাহায্য করেছিলেন।লিঙ্কনকে  স্প্রিংফিল্ডে জন টি স্টয়ার্ট নামে একজন আইন ব্যবসায়ী সঙ্গী করে নেই।লিঙ্কনকে মাত্র পাচ ডলার পারিশ্রমিক দিয়া হতো।লিঙ্কন তার প্রচন্ড দাবির মাধ্যমে ভ্যান্ডালিয়া থেকে রাজধানী স্পিংফিল্ডে আনায় জনগন তাকে ভালোবাসতে শুরু করে।


১৮৩৯ সালের কোন এক সময় স্প্রিংফিল্ডে এক বলনাচের আসরে নীল নয়না গোলগাল চেহারার মেরী টডের সাথে দেখো হয়। মেরী টড ছিলেন এডওয়ার্ডসের ছোট বোন। মেরী টড ছিলেন বুদ্ধিমতী সুশিক্ষিত আর রাশভারী।তিনি সেই বল নাচে মেরীকে নাচের জন্য অনুরোধ কেরেছিলেন।মেরী খুব ফারসী ভাষায় দক্ষ ছিলেন,নাচতে জানতেন,নাটক সাহিত্য ছিলো তার প্রিয়,দামী পোশাক পরিধান করতো মেরী টড আর অন্য দিকে লিঙ্কন ছিলেন সাদামাটা মানুষ,চরিত্রে শান্ত বিনয়ী,নিরহঙ্কার ও ক্ষমাশীল মানুষ।সেই সময় লিঙ্কন আর স্টিফেন ডগলাস ছিলেন মেরী টডের দুই সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত স্বামী।মেরীর সবচেয়ে বদগুন ছিলো তিনি অত্যন্ত বদরাগী প্রকৃতির নারী।তিনি কামনা করতেন তার ভাবী স্বামী হবে আমেরকিার প্রেসিডেন্ট হবে।

ডেমোক্রান্ট দলের নির্বাচিত প্রার্থী ছিলেন ডগলাস আর রিপাব্লিকান দলের প্রার্থী ছিলেন আব্রাহাম লিঙ্কন।মেরী ঠিক করেন এই দুজনের মধ্যে যার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশী তিনি তাকে বিয়ে করবেন। সেই তুলনায় লিঙ্কনের চেয়ে ডগলাসের বেশী মাত্রায় সম্ভাবনা ছিলো।এডওয়ার্ড চাইতেন মেরী ডগলাসকে বিয়ে করোক। কারন ডগলাসের প্রচুর টাকা আছে গাড়ি আছে।লোকের কাছে পরিচিত ছিলো  ভালো বক্তব দিতে পারতো তার কন্ঠে ছিলো যাদুকরী ক্ষমতা। সেই সময় স্পিংফিল্ডে ছোটখাটো একটি মারামারি ঘটনা ঘটে গেলো ।মেরীর এক বান্ধবীর স্বামীকে মারধর করে ডগলস তিনি ছিলেন একজন কাগজের সাম্পাদক।ডগলস তাকে কুৎসিত ভাসায় গালাগালি দেয় এবং তাকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। মেরী টড এই সংবাদ শুনে ঘৃনায় শিউরে উঠে সে মনে মনে ঠিক করে ডগলাসকে বিয়ে করবে না মেরী।ডগলাস ক্ষমা চাইলেও মেরী তাকে ক্ষমা করে নেই।

তারপর মেরী টড আব্রহাম লিঙ্কনকে আকরে ধরনে।সেই ঠিক করে তাকে বিয়ে করবে।মেরী শুধু কথা বলতো আর লিঙ্কন শুধু শুনতেন। এই ভাবে ১৮৪০ সালে এক সময়  দুজনের বাগদান করলেন পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন বলে।

প্রেসিডেন্টের স্ত্রী হওয়ার লক্ষ্যে মেরী টডঃ
আব্রাহাম লিংকন আর তার স্ত্রী মেরী টড



লিংকন ১৮৪০ সালের মেরী টডের সাথে বাগদান ঘোষনা করেছিলেন।এই সময় তিনি রাজনীতিতে নিয়মিত অংশ গ্রহন করতো।তিনি ডেমোক্রেসি দলের বিপক্ষে বক্তব দিয়ে অসাধারন খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। সেই সময় ডেমোক্রেসি দলের প্রধান ছিলেন মিঃহুইগ।লিংকনের চমৎকার বক্তবর কথা মেরীটডের কানে গেলো।লিংকন তারপর এডওয়ার্ড দম্পতির বাড়িতে গেলো তখন মেরী লিংকনকে আবেগে জরিয়ে ধরে বলো তুমি আমরে সত্যিকারের গর্ব।লিংকন খুশী হলো এবং মেরীকে কাছে টেনে নিলো।লিংকন তখন নিজেকে সবচেয়ে সুখী মানুষ ভাবতে শুরু করলো।দুজনের বিয়ের দিন শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়ে গেলো ।

লিংকন এক সময় তার রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে  ছদ্মনামে জার্নাল কাগজে বিপক্ষের দলের বিরুদ্ধে আক্রমনাত্মাক লেখা প্রকাশ করতে থাকে। তিনি আন্ট বেকার নামে লিখা প্রকাশ করতেন। সেই  সময় আইরিশ বংশের জেমস শিল্ডস ছিলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী।তিনি ব্যাপারটা জানতে পেরেন। তখন লিংকন আর তার মধ্যে দ্বন্দ্ব যুদ্ধ শুরু হয়।শেষ পর্যন্ত বন্ধুদের অনুরোধে দ্বন্দ্ব যুদের পরিসমাপ্তি হয়।

একসময় লিংকন আর মেরীটডের মধ্যে নানা রকম সমস্যা দেখা গেলো।লিংকন যে কোন রকম মার্জিত পোশাক পরতো না তা মেরী জানতো।মেরী লিংকনকে নিজের যোগ্য করে তুলতে চাইলো।কিন্তু লিংকন তাতে চরম বিরক্ত হতো।সব রমকম গুন হয়তো মেরীর আছে কিন্তু মানুষের মন জয় করার ক্ষমতা তার ছিলো না।মেরী একগুয়েমী ভীষন ভাবে বেড়ে যায় লিংকনকে পরিবর্তন করার জন্য।লিংকনকে শুধরে নিতে না পারাই মেরী প্রচন্ড রাগে ফেটে পরতো।লিংকনের উপর বার বার রাগ করতো।মেরীর ব্যবহারে খুবই বিব্রত  হয়ে পড়লেন লিংকন।তিনি মেরীকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলেন।মেরী সাথে দেখা হলে  লিংকনের মনে হতো যে চিৎকার করবে। এই ভাবে দুজনের জীবনে অন্ধকার নেমে আসে।অবশেষে কোন এক অজনা কারনে তাদের বিবাহ ভেঙ্গে যায়। আজও এর কারন জানা যায় নিই।এই ঘটনা অনেকটাই অন্ধকার ।


এডওয়ার্ডস পরিবারে নতুন একটি মেয়ের এলো তার নাম ম্যাটিলডা। মেলী টডের দূরে সম্পর্কের আত্মীয়। মেরী টডের চেয়ে কম শিক্ষিত কিন্তু সে ছিলো নম্র আর ভদ্র তার ব্যবহার ছিলো অমায়িক।স্বভাবতই লিঙ্কন ম্যাটিলডা প্রতি আকৃষ্ট হতে লাগলো।মেরী সেটা বুঝতে পেরে লিংকনকে ম্যাটিলডের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারবে না লিংকনকে কথা দিতে হলো মেরীকে।এতে লিংকন খুব আঘাত পেয়েছিলো।এর পর থেকে মেরীর প্রতি লিংকনের একটু একটু করে আকাঙ্ক্ষার ঘাটতি হতে থাকে।লিংকন চিন্তা পরে যায় মেরীকে জীবন সঙ্গী হিসাবে নেওয়া ঠিক হবে কি না। তার দুজনেই ছিলো দুই মেরুর বাসিন্দা তাদের চিন্তা ভাবনা আচার ব্যবহার কোন মিল ছিলো না। মেরী ছিলো জেদী আর একগুয়েমী।এই সময় লিংকন অসম্ভব মনকষ্টে ভোকতে লাগলো,তিনি যে মেরীকে বিয়ে করতে পারবে না এই কথা বলার মতো সাহস তার ছিলো না।লিংকন মানসিক যন্ত্রনায় ছটফট করতে লাগলো।লিংকন সেই সময় প্রায় অসুস্থ থাকতো।অবশেষে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে লিংকনকে তার বুন্ধরা উপদেশ দিলো ,স্পট করে মেরীকে জানিয়ে দিতে যে তাকে তুমি বিয়ে করতে পারবে না।শেষ পর্যন্ত লিংকন মেরী বাড়ীতে রওনা হলো। লিংকন মেরীকে জানালো যে তাকে সে বিয়ে করতে পাবে না এই কথা শুনে মেরীর দুই চোখে দিয়ে জল পরতে থাকে। লিংকন নিজেকে আর ধরে না থেকে মেরীকে জরিয়ে ধরে চুমু খাই।তাদের বিয়ে ঠিক হয়।বিয়ের দিন যত এগিয়ে আসে লিংকন ততো আতঙ্ক আর দুসময় পার করতে থাকে।এমনকি লিংকন বিধান সভায় গিয়ে কোন কথা বলতে পারে নিই তার এই মানসিক চিন্তার কারনে।


স্বাভাবিক নিয়মে বিয়ের দিন চলে এলো । এডওয়ার্ডস এর বাড়িতে নানা রমকম আসবাবপত্র আসতে শুরু করলো,নিমন্ত্রণ হলেন নামী গন্য মান্য ব্যক্তিরা,নানরকম সু খাদ্য পরিবেশন হতে লাগলো,সারা শহরে উৎসবে আনন্োমেজে ফুটে উঠেছে।সাতাট বেজে যায় লিংকন আর আসে না বিয়ে বাড়ি সবাই উৎকন্ঠিত ভাবে অপেক্ষা করতে থাকে লিংকনের। সবাই মনে করেছিলো যে লিংকন কোন বিপদে আটকা পরেছে।এইদিকে মেরী আস্তে আস্তে কান্নাই ভেঙ্গে পড়ে তারই বেশী লজ্জা হতে থাকে সে সবার সামনে মুখ দেখোবে কি করে।শেষ পর্যন্ত এডওয়ার্ড পরিবার লিঙ্কনকে খুজতে বের হয়।কিন্তু তারা কোন হদিস পায় না লিঙ্কনের। এই ভাবে বিয়ের লগ্ন বয়ে যায়।
হতাসাগ্রস্ত লিঙ্কন মেরী টডের সাথে পুনরায় মিলনঃ

সারা শহরে লিংকনকে তোলপার করে খোজা হলো।লিংকনকে শেষ পর্যন্ত প্রায় উন্মত্ত অবস্থায় তার অ্যাটর্নী অফিসেই পাওয়া গেলো। লিংকন সেখানে বিকারগ্রস্থ অবস্থায় ছিলেন। লিংকনরে বন্ধুরা মনেকরেছিলো লিংকন হয়তো সত্যি সত্যি পাগল হয়ে গেছে।এসব দেখে মেরী টডের আত্মীস্বজন বলাবলি করতে লাগলো এই বিয়ে না হওয়াই ভালো।কারন উন্মাদ হয়ে  গেছে পাত্র।সM





 









 







 
  










  

No comments:

Post a Comment